কলকাতায় সংগঠনটির সাধারণ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এই দাবি তুলে বলা হয়েছে, জিএসটি-র খরচ না বসলে প্রিমিয়াম বেশ কিছুটা কমতে পারে। প্রতীকী ছবি।
জীবন বিমা এবং স্বাস্থ্য বিমা কতটা জরুরি, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে অতিমারি। বহু পরিবার যেমন একমাত্র রোজগেরে মানুষটিকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েছে, তেমনই সংক্রমণের জেরে বা পরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যায় হাসপাতালের খরচ চালাতে গিয়ে অনেককে হাত দিতে হয়েছে জমানো পুঁজিতে। অথচ গ্রাহক মহলের অভিযোগ, হালে বিমার প্রিমিয়ামের খরচ অনেক ক্ষেত্রে এতটাই বেড়েছে যে, একাংশ তা চালাতে পারছেন না। বিশেষত স্বাস্থ্য বিমাগুলিতে। বিমার সুরক্ষা বহাল রাখা নিয়ে আমজনতার স্বার্থ রক্ষায় তাই সব ধরনের প্রকল্পে প্রিমিয়ামের উপর থেকে জিএসটি তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এই শিল্পের কর্মী সংগঠন অল ইন্ডিয়া ইনশিয়োরেন্স এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন (এআইআইইএ)।
কলকাতায় সংগঠনটির সাধারণ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এই দাবি তুলে বলা হয়েছে, জিএসটি-র খরচ না বসলে প্রিমিয়াম বেশ কিছুটা কমতে পারে। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে যা সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেবে। তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, জীবন বিমা এবং দুর্ঘটনা বিমার প্রিমিয়ামে পৃথক এবং অতিরিক্ত আয়কর ছাড়, গ্রাহক পরিষেবার উন্নতির জন্য বিমা সংস্থার শূন্যপদগুলি পূরণ, বাড়তি কর্মী নিয়োগ ইত্যাদি। চার দিনের ওই সম্মেলন আজ শেষ হচ্ছে।
জীবন এবং স্বাস্থ্য-সহ সব ধরনের বিমার প্রিমিয়ামের উপরে এখন জিএসটি বসে ১৮%। বিমা কর্মীদের ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ এআইআইইএ-র অভিযোগ এত চড়া কর দেশে বিমা সম্প্রসারণের পথে বড় বাধা। এই ধরনের সুরক্ষা প্রকল্পের উদ্দেশ্যেরও পরিপন্থী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘বিমার খরচ না কমালে দেশে এর প্রসার ঘটবে না। আর খরচ কমাতে আগে প্রিমিয়ামে জিএসটি ছাড় দরকার। ইতিমধ্যেই বহু প্রকল্প স্বল্প এবং সাধারণ আয়ের মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে এবং ছোট-মাঝারি শহরগুলিতে।’’
শ্রীকান্তবাবুর প্রশ্ন, সোনার গয়না বা হিরের উপরে যেখানে ৩% জিএসটি নেওয়া হয়, সেখানে বিমার প্রিমিয়ামে ১৮% বসানোর মানে কী? তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র এক দিকে দেশে বিমা সম্প্রসারণের জন্য সওয়াল করছে। অন্য দিকে তারাই মোটা হারে কর বসিয়ে সেই পথে বাধা তৈরি করছে। এই সুরক্ষা প্রকল্প তো অল্প আয়ের মানুষেরই রক্ষাকবচ হওয়া উচিত।’’ স্বাস্থ্য বিমার মতো ৮০সির বাইরে জীবন বিমার প্রিমিয়ামে আলাদা করছাড়েরও দাবি তুলেছেন তাঁরা।