চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে গিয়ে হালে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্রুত গতিতে সুদের হার বাড়াচ্ছে। প্রতীকী ছবি।
আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশে সুদ বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণ (ইসিবি) নেওয়ার খরচ চড়েছে। সেই কারণেই ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিতে বেড়ে গিয়েছে ঋণের চাহিদা। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন ইয়েস ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ইন্দ্রনীল পান।
দেশের আমদানি-রফতানিতে টাকার সাপেক্ষে চড়া ডলারের (৮১.৭৪ টাকা) প্রভাব নিয়ে এ দিন বণিসভা ভারত চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত সভায় ইন্দ্রনীল বলেন, শিল্পপতিদের ব্যবসার জন্য ঋণ চাই। তার বড় অংশ বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণ। কারণ, এত দিন বিদেশ থেকে নেওয়া সেই সব ধারে সুদ ভারতের থেকে অনেক কম ছিল। কিন্তু চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে গিয়ে হালে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্রুত গতিতে সুদের হার বাড়াচ্ছে। ফলে এখন ইসিবি-র ক্ষেত্রেও ভারতীয় সংস্থাগুলিকে আগের থেকে অনেক বেশি সুদ গুনতে হচ্ছে। ইন্দ্রনীলের দাবি, আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে সুদের হারের ফারাক আগে ছিল প্রায় ৬৫০ বেসিস পয়েন্ট। এখন দাঁড়িয়েছে ৩৫০ বেসিস পয়েন্টে। যে কারণে বহু সংস্থাই ইসিবি-র পরিবর্তে দেশের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিচ্ছেন। তাঁর মতে, ভারতে ব্যাঙ্ক ঋণ বৃদ্ধির হার বেড়ে ১৮% হওয়ার অন্যতম কারণ এটিই।
এ দিকে, টাকার দামের পতন আটকাতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নাগাড়ে বাজারে ডলার বিক্রি করতে থাকায় দেশের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার কমেছে। সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মহলের উদ্বেগ কাটাতে আরবিআই জানিয়েছে, এখনও কমপক্ষে ৮ মাসের আমদানি বিল মেটানোর মতো ডলার ভাঁড়ারে রয়েছে। ইন্দ্রনীলের দাবি, ‘‘এক সময়ে ১৫ মাসের আমদানির বিল মেটানোর মতো বিদেশি মুদ্রা ছিল। এখন তা ৮ মাস হয়েছে। তবে এর থেকে আরও কমলে বিষয়টি উদ্বেগের।’’
এ দিন, বণিকসভার বৈদেশিক বাণিজ্য সাব-কমিটির মেন্টর সীতারাম শর্মা বলেন, একে বিশ্ব বাজারে সঙ্কট। চাহিদা মার খাচ্ছে। তবে সম্প্রতি ভারতের রফতানি কমার জন্য দায়ী কেন্দ্রীয় কিছু সিদ্ধান্তও। যেমন, ইস্পাত-সহ কিছু পণ্যে রফতানি শুল্ক বসেছে। যা দুর্বল রফতানি বাজারে ভারতকে আরও পিছিয়ে দিয়েছে।