প্রতীকী ছবি
লাফিয়ে বাড়ছে স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামের অঙ্ক। ইতিমধ্যেই তা অনেক গ্রাহকের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। বিশেষ করে সমস্যায় পড়েছেন প্রবীন নাগরিকেরা। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বয়স্কদের প্রিমিয়াম বেড়েছে বেশি। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে উঠেছে যে, স্বাস্থ্য বিমার খরচ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস পণ্ডা।
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এ সংক্রান্ত এক সম্মেলনে দেবাশিস বলেন, পলিসি কেনার খরচ এত বেড়েছে যে, দেশে বিমার প্রসার বাধা পাচ্ছে। এই পরিষেবা পরিচালনার খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ এখন মাত্রাছাড়া। ফলে বিমা সংস্থাগুলিও প্রিমিয়াম অস্বাভাবিক হারে বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, কোভিড দিয়েছে স্বাস্থ্য বিমার প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু প্রয়োজন বুঝলেও অনেকেরই চড়া প্রিমিয়াম গোনার সাধ্য নেই। উল্টে বহু পুরনো গ্রাহক স্বাস্থ্য বিমা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা সামাজিক ক্ষতি।
বিষয়টি নিয়ে কার্যত ক্ষুব্ধ দেবাশিস স্বাস্থ্য বিমাকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনার সওয়াল করেছেন। এ জন্য বিমা সংস্থাগুলিকে পুরোপুরি ডিজিটাল নির্ভর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন বেসরকারি হাসপাতালে খরচ নিয়ন্ত্রণের উপায়ও।
ন্যাশনাল ইনশিয়োরেন্সের অন্যতম প্রাক্তন কর্তা এন বাঞ্চুরও বলেন, “একই চিকিৎসার খরচ এক একটি হাসপাতালে এক এক রকম। নগদ টাকা দিয়ে চিকিৎসা করালে যা বিল হয়, রোগীর বিমা থাকলে তা হয় অনেক বেশি। স্বাস্থ্য পরিষেবার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ তৈরি না হলে এই অন্যায়গুলি আটকানো যাবে না।’’ প্রিমিয়ামে এখন জিএসটি ১৮%। বাঞ্চুর-এর দাবি, এটা আমজনতার রক্ষাকবচ। সামাজিক কল্যাণের বিষয়। প্রিমিয়ামে জিএসটি ছাড় জরুরি। পুরো টাকায় আয়কর ছাড়ও দেওয়া দরকার। চিকিৎসার খরচ মেটাতে বহু মানুষের হাতে টাকা থাকে না। প্রবীণদের সঞ্চয় ভাঙিয়ে অর্থের সংস্থান করতে হয়। তা হলে এ নিয়ে ভাবা হবে না কেন, প্রশ্ন বাঞ্চুরের মতো অনেক বিমা বিশেষজ্ঞেরই।
দেবাশিস বলেন, এখনও এমন কিছু চিকিৎসা রয়েছে যা স্বাস্থ্য বিমার আওতায় নেই। কিছু কিছু রোগ থাকলে গ্রাহক পলিসি কিনতেই পারেন না। বিশেষত ডায়াবেটিস থাকায় বিমার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন বহু মানুষ। সেই ব্যক্তিকে পলিসি বিক্রি করা হয় না। কারণ, ধরে নেওয়া হয় এর জেরে তাঁর হৃদরোগ হবে। ওই সব বিষয়গুলি সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করা দরকার।
প্রিমিয়ামের হার কমানোর ক্ষেত্রে অভিনব উপায় বার করতে বিমা সংস্থাগুলিকে উদ্যোগী হওয়ার বার্তা দিয়েছেন আইআরডিএ কর্তা। বলেছেন, স্টার্ট-আপগুলি এ ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই বিষয়টিতে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে বিমা নিয়ন্ত্রক।