ছবি পিটিআই।
অন্ধকারেই কেটে গিয়েছে ছ-ছ’টা দিন। জল-আলোর দাবিতে কিছু রাস্তায় তুমুল বিক্ষোভ-অবরোধ চলেছে মঙ্গলবারও। তারই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে লাইন সারানোর কাজে আরও ১০০০ অভিজ্ঞ বিদ্যুৎকর্মীকে কাজে লাগাতে চলেছে তারা। মজুরি বাবদ বেশি খরচ করে ভিন্ রাজ্য থেকে আরও কর্মী আনার চেষ্টা চলছে। দ্রুত পুরো পরিষেবা স্বাভাবিক করতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ কর্মী নিয়ে এসেছে সিইএসসি-ও। লোকসংখ্যা বাড়ায় কলকাতা ও হাওড়ার সিইএসসি এলাকায় এখন ১৫০টি দল বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ করছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থার হিসেব, এখনও বিদ্যুৎহীন তাদের ১ লক্ষ গ্রাহক।
বিদ্যুৎ ভবন সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গ থেকে বিদ্যুৎকর্মীদের নিয়ে আসার পাশাপাশি ওড়িশা সরকারের বণ্টন বিভাগ এবং দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিভিসি ও পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজে লোক দিয়েছে। এনটিপিসি-ও বিদ্যুৎকর্মী পাঠাচ্ছে বলে বণ্টন সংস্থা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে রাজ্যের বণ্টন ও সংবহন সংস্থার নিজস্ব কর্মী ও ঠিকাদার সংস্থা মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার কর্মী কাজ করছেন। সিইএসসি এলাকাতে সংখ্যাটা প্রায় ৫০০০-এর বেশি। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাই এখন একমাত্র লক্ষ্য।’’
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, বিপুল সংখ্যক কর্মীকে কাজে লাগানোর পরে মঙ্গলবার পর্যন্ত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা বাদে নদিয়া, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলিতে পরিস্থিতি বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। সারিয়ে তোলা গিয়েছে অধিকাংশ সাবস্টেশন। সিইএসসি-র দাবি, তাদের পরিষেবা এলাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৭% মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ ফেরানো গিয়েছে। আশা, বাকি কাজও খুব শীঘ্রই সেরে ফেলা যাবে।
বিদ্যুতের দাবিতে মঙ্গলবারও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ চলেছে। বণ্টন এলাকায় বিশেষত বহু গ্রামীণ অঞ্চলগুলির কোথাও কোথাও একই ছবি দেখা গিয়েছে।
বণ্টন সংস্থার এক কর্তা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে ওড়িশায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সামলাতে দেড় মাস সময় লেগে গিয়েছিল। রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর তার থেকে কোনও অংশে কম ক্ষতি করেনি আমপান। তার মধ্যেও ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির বহু জায়গায় এবং পুর-শহরগুলিতে ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ পরিষেবা অনেকটাই ফেরানো গিয়েছে বলে দাবি তাঁর।
সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁদের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৩৩ লক্ষের কিছু বেশি। তার মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩২ লক্ষ মানুষের ঘরেই তাঁরা বিদ্যুৎ দিতে পেরেছেন। বাকি ১ লক্ষের ঘরে দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করার জন্য তাঁদের কর্মীরা কাজ করছেন উদয়াস্ত।