প্রতীকী ছবি।
শুধু বড় মাপের মূলধনী খরচে ভর করে আর্থিক বৃদ্ধির রথের চাকায় কতখানি গতি আসবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল দুই মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিল এবং ফিচ।
আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ রেটিংস-এর মতে, দেশের অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে বাজেটে মূলধনী ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আর্থিক বৃদ্ধির পথে বাধাগুলি দূর করার জন্য কোনও কাঠামোগত সংস্কারের কথা বলা হয়নি। আর এ দেশের ক্রিসিল বলছে, চলতি অর্থবর্ষে ৯.২% বৃদ্ধির অনুমান হয়তো মিলবে, কিন্তু আগামী (২০২২-২৩) অর্থবর্ষে ৭.৮% পার করা কঠিন। কারণ, সরকার মূলধনী খরচে জোর দিলেও সরাসরি চাহিদার রাস্তা খোলার কোনও চেষ্টা করেনি বাজেটে। কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষায় পরের বার ৮%-৮.৫% জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ বছর ৯.২%।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, কাঠামোগত সংস্কার কাজ তৈরি, লগ্নি এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে উৎসাহ দেয়। যার হাত ধরে তৈরি হয় আর্থিক বৃদ্ধির পথ। কিন্তু বাজেটে সেই জ্বালানিটাই জোগানো হয়নি বলে বুধবার ইঙ্গিত ফিচের ডিরেক্টর এবং ভারতের সংস্থার অন্যতম বিশ্লেষক জেরেমি জ়ুক-এর। তিনি বলেন, “বাজেটে স্পষ্ট মূলধনী খরচ বাড়িয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্য সরকারের। অথচ সরকারি খরচের জন্য অর্থের সংস্থান করতে নির্ভর করা হচ্ছে আর্থিক উন্নয়ন এবং কর থেকে বিপুল আয়ের উপরে।’’
বাজেটে আয়কর ছাড় বাড়ানোর মাধ্যমে খরচের ক্ষমতা বৃদ্ধির আশা করেছিল দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি। কিন্তু তা হয়নি। ১০০ দিনের কাজের খরচ ৯৮,০০০ কোটি টাকা থেকে কমে ৭৩,০০০ কোটি টাকা হয়েছে। মাথা নামাচ্ছে খাদ্যের ভর্তুকি। ক্রিসিলের মতে, এই সমস্ত সুবিধা দরিদ্রের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায়। অথচ সরকার তার পরিসর না-বাড়িয়ে মূলধনী খরচকে তুরুপের তাস করতে চাইছে। যার সুফল মিলতে পারে দীর্ঘ মেয়াদে। ফলে স্বল্প মেয়াদে চাহিদা এবং অর্থনীতি কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই।
উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্রিসিল এ-ও বলেছে, সংক্রমণ কমায় আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ত্রাণ প্রকল্প গুটিয়ে নিচ্ছে। তাতে চাহিদা কমলে প্রভাব পড়তে পারে ভারতের রফতানিতে। যা বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ এঞ্জিন। পাশাপাশি, অশোধিত তেলের দাম এখনই কমার সম্ভাবনা কম। ফলে মূল্যবৃদ্ধির হার চড়া থাকলে সাধারণ মানুষ আরও কম খরচ করতে চাইবেন। অন্য দিকে, মোদী সরকারের ঘাড়ে চেপে থাকা চড়া ঋণ নিয়ে সাবধান করেছে ফিচ।