লকডাউনে বন্ধ কালীঘাট মন্দির। দূর থেকেই অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
অক্ষয় তৃতীয়া। বছরে যে ক’টি দিন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাত ভরিয়ে দেয়, এটি তার অন্যতম। অথচ এ বার সে দিনই ক্যাশ বাক্স শূন্য থাকল তাঁদের। অনেকে বলছেন, এ বছরের ক্ষতি পোষাতে ক’দিন লাগবে কে জানে!
আফশোস করছিলেন বনগাঁর এক বড় গয়নার দোকানের মালিক বিনয় সিংহ। জানালেন, গত বছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকার গয়না বিক্রি হয়েছিল। এ বার হাত খালি। বৌবাজারের গয়না পাড়াতেও রবিবার একই ছবি। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলছেন, “কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে মলের বাইরে থাকা দোকান খোলাই যেত। কিন্তু ঝুঁকি কে নেবে?’’
কিছু সংস্থা অনলাইনে সোনার বুকিং নিয়েছে। কিন্তু স্বীকার করছে, ব্যবসা অন্যান্য বারের ধারেকাছে পৌঁছয়নি। সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, “জানতাম এ বার ক্রেতাদের দোকানে আসা সম্ভব হবে না। তাই অনলাইনে সোনা বিক্রিতে জোর দিয়েছি। ছাড় দিয়েছি দামেও।’’ তনিশ্ক-সহ আরও কিছু সংস্থা অনলাইনে বুকিং নিয়েছে। তবে গত বছরের ব্যবসার অঙ্ককে ছোঁয়া যায়নি। শুভঙ্করবাবু জানান, গত বছরের তুলনায় এ বার এখনও পর্যন্ত ১৫ শতাংশের মতো ব্যবসা হয়েছে। যে সমস্ত সংস্থার বিপণন পোর্টাল রয়েছে তারা কিছুটা ব্যবসা করেছে।
অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর সেন স্বীকার করেন, অনলাইনে সোনা বিক্রির চেষ্টা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ক্রেতাদের কাছে দোকানে এসে দেখেশুনে সোনা বা গয়না কেনার বিকল্প এখনও নেই। তাঁর দাবি, গত এক বছরে সোনার দাম প্রায় ৫২% বেড়েছে। সেটাও চাহিদা কম থাকার একটা কারণ।
কিছু সংস্থা অবশ্য নেটে বুকিং করেনি। পি সি চন্দ্র গোষ্ঠীর এক ডিরেক্টর বলেন, “ঘনিষ্ঠ কিছু ক্রেতার থেকে ফোনে বুকিং নিয়েছি। ব্যবসা করার সুযোগ অনেক পাব। এখন তার সময় নয়।’’ অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ চৌধুরী-সহ অনেক ব্যবসায়ীর দাবি, সোনার বাজার বন্ধ। ফলে তার দাম ঠিক করা মুশকিল হচ্ছে। এ জন্যই তাঁরা অনলাইন বুকিংয়ের পথে যাননি। এ দিন মোটামুটি ভাবে কলকাতায় জিএসটি-সহ প্রতি ১০ গ্রাম গয়নার সোনা ৪৭,০০০ টাকা ও পাকা সোনার ৪৮,৫০০ টাকা দর ছিল।
আরও পড়ুন: ফান্ড-সমস্যায় দ্রুত কেন্দ্রের পদক্ষেপ দাবি
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)