Coronavirus

ছন্দে ফিরতে চেয়েও প্রমাদ গুনছে গয়না শিল্প

লকডাউনের পঞ্চাশ দিনে চক্রব্যূহে ঘুরপাক খাচ্ছে সোনার বাজার।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চোধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৪:১৫
Share:

ছবি সংগৃহীত

লকডাউনের মধ্যে সোনার গয়নার দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য। কিন্তু এখনও পুলিশের সায় মেলেনি। তার উপরে ট্রেন-বাস বন্ধের জেরে কর্মীরা আসতে না-পারায় দোকান খুলতে পারছেন না অনেকেই। আর গ্রিন ও অরেঞ্জ জ়োনে যাঁরা খুলেছেন তাঁদের মতে, অধিকাংশ ক্রেতাই এখন গয়না কিনতে দোকানে পা রাখছেন না। তাই বিক্রি ধাক্কা খাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেহাল অর্থনীতিতে সোনায় লগ্নির প্রবণতা বাড়ছে। যে কারণে দাম না-কমায় গয়নার চাহিদাও বাড়ছে না। সব মিলিয়ে লকডাউনের পঞ্চাশ দিনে চক্রব্যূহে ঘুরপাক খাচ্ছে সোনার বাজার।

Advertisement

স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে জানান, “কলকাতায় সিংহভাগ পুর ওয়ার্ডে দোকান খোলায় নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছেন, রেড জ়োনকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন এলাকা কোন জ়োনে পড়েছে, তা চিহ্নিত হয়নি। সেগুলি চিহ্নিত করে নবান্নে রিপোর্ট পাঠানোর পরে সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলে তবেই দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হবে।’’

সমস্যার কথা মেনে বৌবাজার বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত করের বক্তব্য, “গণপরিবহণ চালু না-হলে কারিগর, দোকানের কর্মী ও ক্রেতারাই বা আসবেন কী করে? তা ছাড়া লকডাউনে মানুষের আর্থিক অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে গয়না কেনার স্বাভাবিক প্রবণতা কবে ফিরবে বলা মুশকিল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: নগদ জরুরি, সেই সঙ্গে খাবার-ওষুধও

বিভিন্ন জেলায় কিছু বিপণি চালু করেছে পিসি চন্দ্র গোষ্ঠী, সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস, অঞ্জলি জুয়েলার্স, তনিশ্‌কের মতো সংস্থা। তবে অনেকেরই দাবি, ব্যবসা তেমন হচ্ছে না। সেনকোর এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, “গত সপ্তাহে কিছু দোকান খুললেও বিক্রি তেমন হচ্ছে না। যাঁরা অক্ষয় তৃতীয়ায় নেটে সোনা কিনে রেখেছিলেন, মূলত তাঁরাই গয়না করাতে আসছেন।’’

পিসি চন্দ্র গোষ্ঠীর এমডি উদয় চন্দ্রের কথায়, ‘‘ব্যবসার ছন্দে ফেরার যাত্রা শুরু করতেই কিছু জেলায় দোকান খুলেছি। এতে কর্মী ও কারিগরেরাও মনে বল পাচ্ছেন।’’ অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ চৌধুরীও বলেন, “প্রায় তিন সপ্তাহ পরে দোকান খুলতে পেরে সকলেরই মনে হচ্ছে, যেন যুদ্ধ জয় করলাম।’’

এ দিকে বনগাঁর গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ আবার জানান, “এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে এক ব্যক্তির করোনা ধরা পড়েছে। তাই একটিও দোকান না-খোলার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। কত দিন অপেক্ষা করতে হবে জানি না।’’ সোনার চড়া দামও যে বিক্রির পথে অন্যতম বাধা, তা-ও মানছেন অনেকে। বুধবারই কলকাতায় ১০ গ্রাম গয়নার সোনার দর ছিল প্রায় ৪৫,৯০০ টাকা (জিএসটি বাদে)। অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক গোল্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর সেনের মতে, এ বছর পুরনো সোনা ভাঙিয়ে গয়না কেনার প্রবণতা বাড়বে। ফলে সোনার আমদানিও কমবে। তাঁর আশঙ্কা, “এ বছর দেশে গয়নার ব্যবসা কমপক্ষে ২৫% মার খেতে পারে।’’

আরও পড়ুন: শিল্পোৎপাদনে রেকর্ড পতন মার্চে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement