—ফাইল চিত্র
সম্প্রতি কারখানায় শ্রমিকদের কাজের সময় দিনে ৮ থেকে বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করার যে নির্দেশিকা জারি করেছে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো রাজ্য, তাকে বেআইনি তকমা দিল বেশ কিছু ইউনিয়ন। অভিযোগ তুলল, এ ভাবে কাজের ঘণ্টা বাড়ানোর জন্য শ্রম আইনের ৫ নম্বর ধারার অপব্যবহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য যে মজুরি দেওয়ার কথা বলেছে গুজরাত সরকার, তা-ও শ্রম আইন বিরোধী বলে দাবি শ্রমিক সংগঠনগুলির। ইউনিয়নের নেতাদের তোপ, ‘‘প্রস্তাবিত নতুন শ্রম বিধিতে কেন্দ্র কাজের সময় ইচ্ছে মতো বদলানোর ব্যবস্থা করে রেখেছে। এ ভাবে নিশ্চুপে আইন ভেঙে তারই জমি তৈরি করা হচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে। আর তা করা হচ্ছে এমন এক সময়, যখন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার সুযোগটুকুও নেই শ্রমিকদের।’’
১৯৪৮ সালের ফ্যাক্টরিজ় আইনের ৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, যুদ্ধ, বিদেশি আগ্রাসন (এক্সটার্নাল অ্যাগ্রেশন) বা অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার (ইন্টার্নাল ডিস্টার্ব্যান্স) কারণে যদি দেশের বা দেশের কোনও অংশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় ও গুরুতর জরুরি অবস্থা তৈরি হয়, শুধু তখনই সরকার সংস্থা ও কারখানায় কাজের ঘণ্টা বদলাতে পারে। এআইইউটিইউসি-র সভাপতি শঙ্কর সাহার অভিযোগ, “ওই ধারা স্পষ্ট বলেছে, দেশের সার্বভৌমত্ব সঙ্কটে পড়ায় জরুরি অবস্থা তৈরি হলে, তবেই সরকার এমন পদক্ষেপ করতে পারে। করোনা হানায় মাথা তোলা বর্তমান সমস্যাকে সেই শ্রেণিতে ফেলা যায় না। ফ্যাক্টরিজ় আইনে কার্যত গৃহযুদ্ধের মতো জরুরি অবস্থাকেই ‘ইন্টারনাল ডিস্টার্ব্যান্স’ বলা হয়েছে।’’
এ ছাড়া, গুজরাত সরকার বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, কোনও কারখানায় দিনে ৮ ঘণ্টা কাজের জন্য শ্রমিক যদি ৮০ টাকা পান, ১২ ঘণ্টা কাজ করে পাবেন ১২০ টাকা। সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের অভিযোগ, “আইন ভাঙা হয়েছে মজুরিতেও। ফ্যাক্টরিজ় আইনের ৫৯(১) ধারায় আছে, অতিরিক্ত সময় বা ওভারটাইম কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দ্বিগুণ মজুরি দিতে হবে। কিন্তু এখানে শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।’’