প্রতীকী ছবি
অশনি সংকেত ছিলই। এ বার বাস্তবেও বিমান শিল্পের উপরে নেমে এল কালো ছায়া। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে চারটি বড় উড়ান সংস্থা পরিষেবা গুটিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করল সরকারি ভাবে। তার মধ্যে ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার মতো সে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উড়ান সংস্থার এই সিদ্ধান্তে হতবাক বিশ্ব! এক ধাক্কায় সংস্থাটির ১৬,০০০ কর্মীর চাকরি গিয়েছে। গুটিয়ে নেওয়ার তালিকায় রয়েছে এয়ার মরিশাস, সাউথ আফ্রিকান এয়ারলাইন্স এবং নরওয়েজ় এয়ারওয়েজ়।
এই খবরে বুক কেঁপে উঠেছে ভারতের বিভিন্ন উড়ান সংস্থার কর্মীদের। বিমান পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া বেচে যেতেও পারে। কিন্তু এ দেশের একাধিক বেসরকারি উড়ান সংস্থার ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে। এক সংস্থা-কর্তার কথায়, ‘‘ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার এই হাল হলে আমাদের কী হবে ঈশ্বরই জানেন!’’
গত ২২ মার্চ থেকে দেশের আন্তর্জাতিক এবং ২৪ মার্চ থেকে সমস্ত ঘরোয়া যাত্রী বিমান বন্ধ। কবে ফের পরিষেবা শুরু হবে জানা নেই। খরচ ছাঁটতে ইতিমধ্যেই কর্মীদের বেতন ছাঁটাই কিংবা বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানোর মতো পদক্ষেপ করেছে কোনও কোনও সংস্থা। এর মধ্যে লকডাউনের সময়ে টিকিট বিক্রি করে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলেছিল সংস্থাগুলি। তা নিয়ে দেশ জুড়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হতেই সেই টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে বিমান মন্ত্রক। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই টাকা দিয়ে কোনওক্রমে খরচ চালানো হচ্ছিল। তা ফেরত দিতে গেলে পরিষেবা গুটিয়ে দিতে বাধ্য হতে পারে একাধিক সংস্থা।
আরও পড়ুন: করোনা আবহেই সারে ভর্তুকি ছাঁটাই
ট্র্যাভেল এজেন্টস ফেডারেশনের কর্তা অনিল পঞ্জাবির মতে, ৩ মে-র পরে পরিষেবা চালু হলেও, যে সংস্থা ১০০টি উড়ান চালাচ্ছিল, সে বড়জোর ২০টি চালানোর অনুমতি পাবে। আগামী দিনেও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম চলবে। সে ক্ষেত্রে ১৮০টি আসনের উড়ানে ১০০ থেকে ১২০টির টিকিট বিক্রি করতে পারবে সংস্থা। জ্বালানি, বেতন, বিমানবন্দরকে দেওয়া পরিষেবা কর মিলিয়ে একটি উড়ানের যত খরচ হয়, লাভ না-করে সেই খরচটুকু তুলতে গেলেও অন্তত ১২০টি আসনের টিকিট বিক্রি করতে হবে। অনিল বলেন, ‘‘অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মেই টিকিটের দাম বাড়বে। টিকিটের দাম বাড়লে যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করবে। এক ভয়াবহ ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে আমরা।’’
এই অবস্থায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ ছাড়া উপায় নেই বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। অনিল জানিয়েছেন, জ্বালানির কর মকুব, বিমানবন্দরকে দেওয়া অফিসের ভাড়া, ল্যান্ডিং-পার্কিং ফি এবং লিজ় নেওয়া বিমানের ভাড়া মকুবের জন্য উদ্যোগী হোক সরকার। না-হলে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে দেশের বিমান শিল্পের সামনে।
আরও পড়ুন: ছোট শিল্পের পাশে দাঁড়াতে মাঠে রাহুল
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)