প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের নয়া নিয়মের বিরোধিতা চিনের। ছবি: শাটারস্টক
প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)-এর নিয়ম বদলের তীব্র বিরোধিতা করল চিন। নয়া নীতি ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও) বা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতির বিরোধী বলে দাবি করে এই নয়া নীতি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে বেজিং। নয়াদিল্লিতে চিনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই নীতকে ‘বিভেদমূলক’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। যদিও ভারতের তরফে আগেই দাবি করা হয়েছিল, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ধুঁকতে থাকা সংস্থাগুলিকে সুযোগসন্ধানী বিদেশি সংস্থা অধিগ্রহণ করে নিতে পারে বলেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে এই বদল আনা হয়েছে।
শনিবার ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে একটি প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, ‘‘ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত রয়েছে, এমন দেশের কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা ভারতীয় কোনও সংস্থায় বিনিয়োগ করতে চাইলে সরকারের মাধ্যমেই তা করতে হবে। সরাসরি দুই সংস্থার মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা যাবে না।’’ আগে এই নিয়ম কার্যকর ছিল শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। কিন্তু নয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে তার আওতায় পড়ে গিয়েছে চিন, নেপাল, ভুটান, মায়ানমারও।
আর এতেই গোঁসা হয়েছে বেজিংয়ের। সোমবার চিনা দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত সরকার বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা ডব্লিউটিও-র বিভেদহীন নীতির বিরুদ্ধে। কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের উপর এ ভাবে বাধার সৃষ্টি করা যায় না। এটা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্বাধীনতার উপরেও হস্তক্ষেপ।’’
সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানিয়েছে শি চিনফিং সরকার। দূতাবাসের বক্তব্য, ‘‘আমরা আশা করি এই বিভেদমূলক আচরণ পুনর্বিবেচনা করে সব দেশের ক্ষেত্রে একই নিয়ম কার্যকর করা হবে। খুলে দেওয়া হবে উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগের পরিবেশ।’’
আরও পড়ুন: শুরুতেই বেলগাছিয়া বস্তি, আজ র্যাপিড টেস্ট শুরু হল রাজ্যে
আরও পডু়ন: কলকাতা-সহ ৭ জেলার অবস্থা গুরুতর, রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় দল
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউনের জেরে শিল্প-বাণিজ্য কার্যত স্তব্ধ। বিভিন্ন সমীক্ষক সংস্থার ইঙ্গিত, বহু সংস্থা দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। আর সেই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে অধিগ্রহণ করে নিতে পারে চিন। এমন আবহেই যোগ হয় এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে চিন অংশীদারি বাড়ানোয়। চিনের শীর্ষ ব্যাঙ্ক 'পিপল্স ব্যাঙ্ক অব চায়না' এইডিএফসি-তে অংশীদারি বাড়িয়ে দেয়। তার জেরে আশঙ্কা আরও জোরদার হয় শিল্প-বাণিজ্য মহলে।
এর পরেই কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক রাহুল গাঁধীও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এবং কেন্দ্রকে সাবধান করে বার্তা দিয়েছিলেন। সতর্ক করেছিল, সঙ্গ পরিবারও। সঙ্ঘের অর্থনীতি বিষয়ক নীতি নির্ধারনকারী শাখা স্বদেশি জাগরণের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে বলা হয়, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের মালিকানা যাতে ভারতের হাত থেকে না যায়, তার জন্য সব রকম চেষ্টা করতে। তার পরেই তড়িঘড়ি এফডিআই নীতিতে বদল আনে কেন্দ্র। আর তার পরেই চিনের এই প্রতিবাদ।