পানাগড় থেকে রাজারামবাটি পর্যন্ত প্রস্তাবিত ১১২ কিলোমিটার লাইনের প্রায় ৯০ কিমির জমির আরওইউ মেলায় সেখানে পাইপ জোড়া হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বাড়ি-হোটেল-রেস্তরাঁর রান্নায় এবং গাড়ি ও শিল্পের জ্বালানি হিসেবে রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেল যে তিনটি পাইপলাইন গড়ছে, তার অন্যতম জগদীশপুর (উত্তরপ্রদেশ)-হলদিয়া। সেটি চালু হয়েছে পানাগড় পর্যন্ত। সেখান থেকে নদিয়ার গয়েশপুর পর্যন্ত বাকি অংশ প্রথমে এ বছরের মার্চ-এপ্রিলে শেষ করা লক্ষ্য থাকলেও কিছু জায়গায় জমি ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে জটিলতার জেরে তা পিছিয়েছিল জুনে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কোথাও কোথাও সমস্যা চললেও সেই লক্ষ্য ছোঁয়ার বিষয়ে আশাবাদী রাজ্য এবং গেল।
রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগাতে ২০০৫ সালে গেলের সঙ্গে আলোচনার কথা জানান তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পালাবদলের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। বস্তুত, পানাগড় পর্যন্ত লাইন চালু হওয়ায় সেই গ্যাস পেয়ে কার্যত ঝাঁপ বন্ধের মুখ থেকে ফেরে ম্যাটিক্সের সার কারখানা। রাজ্যের শিল্পের একাংশও তাই গেলের লাইনের দিকে তাকিয়ে। তবে এর আগে সংস্থাটির কর্তারা পাইপ বসাতে জমি ব্যবহারের অনুমোদন (আরওইউ) দ্রুত পেতে সওয়াল করেছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা, না হলে কাজ পিছোবে, খরচও বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের খবর, পানাগড় থেকে রাজারামবাটি পর্যন্ত প্রস্তাবিত ১১২ কিলোমিটার লাইনের প্রায় ৯০ কিমির জমির আরওইউ মেলায় সেখানে পাইপ জোড়া হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৯৫% পাইপ বসেছে। অন্য দিকে, রাজারামবাটি-গয়েশপুরের ২২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ১২ কিমি পাইপ জুড়ে বসানো সম্পূর্ণ। বাকি জায়গার কিছু ক্ষেত্রে হয় আরওইউ মেলেনি বা মিললেও চড়া হারে বাড়তি ক্ষতিপূরণের দাবিতে কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন কর্মীদের একাংশ। গেলের অবশ্য দাবি ছিল, ক্ষতিপূরণের যা প্যাকেজ দেওয়ার কথা, রাজ্যের আর্জিতে তার দ্বিগুণেরও বেশি দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রশাসনের শীর্ষ থেকে তৃণমূল স্তরেও সহযোগিতার কথা জানিয়েছিল গেল।
রাজ্যের এক কর্তা বলেন, “প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে কথা হয়। পরিস্থিতি কী পর্যায়ে আছে, তার পর্যালোচনা হচ্ছে। যেখানে যা সমস্যা ছিল, তার সমাধান হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও তাঁদের বুঝিয়ে সমস্যা মেটাতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। আরও সমস্যা থাকলে মেটানো হবে। সময়ে কাজ শেষ করাতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর।”