কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
দেশে দুর্নীতি থাকবে না বলে সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের নতুন অভিযোগ: আদানি গোষ্ঠী-সহ বিভিন্ন ‘কাছের বন্ধু’ ও বিজেপিকে অনুদান প্রদানকারী সংস্থাকে ভারতমালা প্রকল্পে পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে প্রকল্পের খরচ বেড়েছে। রবিবার সিএজি-র ২০১৭-২০২১ পর্যন্ত রিপোর্ট তুলে ধরে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের দাবি, যোগ্য না হলেও তেলঙ্গানায় সড়ক তৈরির বরাত পেয়েছে আদানি ট্রান্সপোর্ট। প্রকল্পের অঙ্ক ১৫৬৬ কোটি টাকা। বরাত পেয়েছে বিজেপি-কে অনুদান দেওয়া আরও কিছু সংস্থাও। একমাত্র যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) তদন্ত কেন্দ্রের দুর্নীতি সামনে আনতে পারে।
রমেশের অভিযোগ, ৩৫,০০০ কিলোমিটার সড়ক তৈরির প্রকল্পে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ ও বিজেপির ‘অর্থ জোগানকারী’ সংস্থাগুলিকে। এর মধ্যে তেলঙ্গানায় সূর্যপেট থেকে খাম্মাম পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার নির্মাণের বরাত গিয়েছে আদানি ট্রান্সপোর্টের নেতৃত্বাধীন জোটের হাতে। যার ৭৪% অংশীদারি আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাটির। অথচ সিএজি-র রিপোর্ট বলছে, ‘‘প্রকল্পের জন্য যে যোগ্যতা দরকার, সড়ক তৈরির সেই পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা সংস্থার ছিল না।’’ কংগ্রেস নেতার দাবি, আদানি ট্রান্সপোর্ট অন্য সংস্থার নামে অভিজ্ঞতার প্রমাণ জমা দিয়েছিল। তা-ও আবার জাতীয় সড়ক তৈরি নয়, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের। তাদের জোটের হাতে যে ৩০৪ কোটি টাকা মূলধন রয়েছে দেখানো হয়েছিল, সেখানেও নাম ছিল অন্য সংস্থার। তার পরেও ‘মোদী ম্যাজিকের’ হাত ধরে ২০১৯-এর ২০ ফেব্রুয়ারি আদানিদের সংস্থাটিকে যোগ্য বলে ঘোষণা করা হয় এবং তাদের জোটকে ৮ মার্চ বরাত দেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যার অধীনে প্রকল্পের ৪০% সরাসরি নগদ ভর্তুকি পায় আদানি ট্রান্সপোর্টের জোট।
রমেশ বলেন, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ও তাদের পুঁজি জোগায়, এমন অন্যান্য সংস্থাকেও বিভিন্ন প্রকল্পের বরাত দেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, এর পরেই বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে, যেগুলির উত্তর একমাত্র জেপিসি-ই দিতে পারে।
উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপি করে সংস্থার শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগ তুলেছিল আমেরিকার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। একই দাবি তদন্তকারী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ওসিসিআরপি -রও। তাদের অন্য রিপোর্টে অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে পরিবেশ আইন শিথিলের দরবার করেছিল বেদান্ত। কথা ছাড়াই ‘অবৈধ’ ভাবে আর্জি মেনে নেয় কেন্দ্র। সেখানে অনুদানের বদলে সুবিধার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়।