গৌতম আদানি। ফাইল ছবি।
আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) লগ্নিকে কেন্দ্র করে ফের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল কংগ্রেস। দাবি করল, প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পরেও আদানিদের সংস্থায় লগ্নি বাড়িয়েছে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। আর জীবন বিমা গ্রাহকদের টাকায় সেটা করতে তাদের বাধ্য করা হয়েছে। উদ্দেশ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ এবং প্রায় সব সংস্থার শেয়ার দরে ধসের মুখে পড়া গৌতম আদানিকে আর্থিক সমস্যা থেকে ‘উদ্ধার’। গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্ত করতে মঙ্গলবার ফের যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গড়ার দাবিও তুলেছে কংগ্রেস।
বিরোধী দলটির প্রশ্ন, দুর্নীতির অভিযোগে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার দর যখন নীচে নেমেছে এবং সেগুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, তখন সেগুলিতে এলআইসি-র লগ্নি বাড়ানো হল কেন? বিশেষত ওই সংস্থায় জমা টাকার সঙ্গে যখন মানুষের সুরক্ষিত থাকার শর্ত জড়িয়ে।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (যোগাযোগ), সাংসদ জয়রাম রমেশ বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২১-এ জুন পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর প্রধান সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের শেয়ারে এলআইসির লগ্নি ছিল ১.৩২%। তার পরে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাসে তা বেড়ে হয় ৪.২৩%। এমনকি গত জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানিদের বিরুদ্ধে বেআইনি পথে অর্থ জুগিয়ে কৃত্রিম ভাবে শেয়ার দর বাড়ানো এবং কর ফাঁকির অভিযোগ প্রকাশের পরেও সংস্থায় এলআইসি-র লগ্নি বেড়েছে। মার্চের মধ্যে তা হয়েছে ৪.২৬%। সংস্থার ৩.৭৫ লক্ষ শেয়ার কিনেছে এলআইসি। রমেশের প্রশ্ন, লগ্নি কেন এমন সময় বাড়ানো হল, যখন আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের দর ৬০% পড়েছিল? গোষ্ঠীর আরও কিছু সংস্থাতেও লগ্নি বাড়িয়েছে এলআইসি। তাঁর তোপ, সাধারণ মানুষের টাকা ওখানে ঢালতে বাধ্য করা হয়েছে। তাই আদানিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলির তদন্ত করতে অবিলম্বে সংসদীয় কমিটি তৈরি আরও জরুরি হয়ে পড়েছে।
আজ এনসিপি-র সভাপতি শরদ পাওয়ার বলেন, “জেপিসি চাই না। কারণ, বিজেপির সাংসদ বেশি বলে সেখানে ওদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকবে। নেতৃত্বেও থাকবে শাসকদল। ফলে কে কমিটি নিয়ন্ত্রণ করবে এবং তার প্রভাবই বা রিপোর্টে কী হবে, প্রশ্ন থাকে। তবু বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে কংগ্রেসের দাবির বিরোধিতা করব না।’’ এনসিপি বরং মনে করে, এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত কমিটি তদন্ত করলে যথার্থ ফল মিলবে।