—প্রতীকী চিত্র।
তেল-কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানিকে কেন্দ্র করে বিভাজিত বিশ্ব। সরগরম দুবাই!
দুবাইতে বসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সম্মেলন (কনফারেন্স অব পার্টিজ় বা কপ২৮)। সেখানে জীবাশ্ম জ্বালানির ভূমিকাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে সংঘাতের আবহ। দূষণ হ্রাসের লক্ষ্যে কিছু দেশ ক্রমান্বয়ে সেগুলির ব্যবহার বন্ধের পক্ষে। তারা চায়, সম্মেলনে তা উল্লেখ করা হোক। অপরপক্ষে তেল রফতানিকারী সৌদি আরব-রাশিয়ার কড়া মনোভাব— দূষণ হ্রাসের কথা কথা বলুক কপ২৮। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানির উল্লেখই থাকা চলবে না।
জীবাশ্ম জ্বালানির দূষণ কমাতে তেল ও কয়লার পরিবর্তে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি, প্রাকৃতিক গ্যাস কিংবা তেলের সঙ্গে ইথানল মেশানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। গাড়ির জ্বালানি হিসেবে তেলের ব্যবহার অদূর ভবিষ্যতে বন্ধের পক্ষে সওয়াল করেছে ভারতও। সব মিলিয়ে জল্পনা সর্বত্র, তবে কি জীবাশ্ম জ্বালানির জমানার শেষের শুরু?
সেই চর্চা কপ২৮-এর অন্দরেও। সেখানে ভারত-সহ প্রায় ২০০টি দেশের মন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। পর্যবেক্ষক মহলের খবর, এ নিয়েই সংঘাতের আবহে কার্যত অচলবস্থার আশঙ্কা সম্মেলনে। গত সপ্তাহে তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক সদস্যদের চিঠি দিয়ে আর্জি জানিয়েছে, সম্মেলনের সমঝোতাপত্রে জীবাশ্ম জ্বালানির উল্লেখ তারা যেন বাতিল করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের আলোচনায় এই প্রথম ওপেক এ ভাবে চিঠি দিয়ে হস্তক্ষেপ করল। ওপেকের সেক্রেটারি জেনারেল হাইথাম অল ঘাইস সংবাদমাধ্যমকে চিঠি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে তাঁর দাবি, কী ভাবে আবহাওয়া ও উষ্ণায়ন হ্রাস করা যায় তা-ই চর্চার কেন্দ্র হওয়া উচিত। কয়লা, তেল বা গ্যাস নয়। হাইড্রোকার্বন-সহ (যা থেকে ওই জ্বালানি তৈরি হয়) সব জ্বালানিতেই বিপুল লগ্নির জরুরি।
উল্টো দিকে, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং দরিদ্র ও ছোট দেশ (উষ্ণায়নের জেরে যারা অস্তিত্বের সঙ্কটে) মিলিয়ে প্রায় ৮০টি দেশের পাল্টা দাবি, সমঝোতায় স্পষ্ট বলা হোক, ক্রমান্বয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ হবে। ভারত ও চিন এতটা কড়া অবস্থান না নিয়েও বিকল্প জ্বালানিতে জোর দেওয়ার বার্তা দিয়েছে। ওপেকের চিঠির প্রসঙ্গে কপ ২৮-এর ডিজি মজিদ আল সুওয়াইদি জীবাশ্ম জ্বালানি শব্দবন্ধ এড়িয়ে জানান, সম্মেলনের সভাপতিত্ব করা সংযুক্ত আরব আমিরশাহি উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার পক্ষে। মঙ্গলবার সম্মেলন শেষের আগে তাই জল্পনা তুঙ্গে!