—প্রতীকী চিত্র।
কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও, চড়া মূল্যবৃদ্ধি স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের (মোড়কবন্দি খাবার, বোতলের জল বা নরম পানীয়, ত্বক চর্চা বা ঘর পরিষ্কারের পণ্য ইত্যাদি) চাহিদাকে ছন্দে ফিরতে দিচ্ছে না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। বিশেষত বছরখানেক ধরে গ্রামে বিক্রি ঝিমিয়ে থাকায়। সাম্প্রতিক কালে কিছু সমীক্ষা দেশের সর্বত্র চাহিদা বাড়ছে বলে দাবি করেছে বটে। তবে উপদেষ্টা সংস্থা ক্যান্টারের পূর্বাভাস, কৃষির মতো ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা বহাল থাকায় আগামী জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিক পর্যন্ত এর ব্যবসা ঢিমে গতিতেই এগোবে। রবি শস্যের উৎপাদন ভাল হলে বছর শেষে চাকা ঘুরতে পারে।
ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির মতে, তাদের ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের বাজার। বৃদ্ধির গতির অনেকটাই নির্ভর করে তার উপর। যে কারণে গত বছর এই শিল্পের একাংশের আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়েছিল। ক্যান্টারের রিপোর্টে দাবি, বর্তমান অবস্থায় চলতি বছরের গোড়ার দিকে এই ব্যবসা এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শ্লথ থাকার আশঙ্কা। এমনকি লোকসভা ভোটের মরসুমে নানা পথে সরকারি আর্থিক সাহায্যের জেরে বাজারে নগদের জোগান বৃদ্ধি এবং তার হাত ধরে কেনাকাটায় গতি আসার ধারণাকেও উড়িয়ে দিয়েছে উপদেষ্টা সংস্থাটি। তাদের বরং বক্তব্য, এই ধারণার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। বরং অতীতে বিভিন্ন ভোটের সময়ে ভোগ্যপণ্য ব্যবসার বৃদ্ধি প্রায় ঘটেনি বললেই চলে। ভোটের সময়ে নানা খয়রাতি প্রকল্প ঘোষণার পরেও দেখা গিয়েছে, বাজার একই থেকেছে অথবা সঙ্কুচিত হয়েছে। ক্যান্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে চাহিদা বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ০.৭%। ২০১৪ সালে সেই হার স্থির থাকলেও, ২০১৯ সালে তা কমেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিমারির পরে ২০২৩-ই ছিল দ্বিতীয় বছর যখন গড় কেনাকাটা বাড়েনি। পণ্যের ৯০টি অংশের মধ্যে অর্ধেকের চাহিদা হয় কমেছে কিংবা একই থেকেছে। চাহিদা সবচেয়ে বেশি কমেছে ভোজ্যতেলের। তার পরেও চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে গড়
খরচ বেড়েছে। সংস্থার মতে, ক্রেতারা যদি ২০২২-এর পরিমাণই কিনতেন, তা হলে তাঁদের খরচ আরও বাড়ত।
সমীক্ষা অনুযায়ী, আটার চাহিদা ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছিল বলে গত বছর স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের মোট ব্যবসা বাড়ে ৬.১%। সেই বিক্রি সরালে বৃদ্ধি ২.৭%। জনসংখ্যা বৃদ্ধিও ব্যবসাকে ঠেলে তুলেছে। ক্যান্টার বলছে, এখন গ্রামকে উদ্বেগে রেখেছে কৃষি। চলতি অর্থবর্ষে কৃষিতে বৃদ্ধির পূর্বাভাস মাত্র ১.৮%। যা গত সাত বছরে সর্বনিম্ন। অনিয়মিত বৃষ্টির ধাক্কায় প্রায় সব খরিফ শস্যের ফলন কমেছে। যা ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায় আরও ক’মাস প্রভাব ফেলতে পারে। তবে রবি শস্যের বীজ বপন ভাল হয়েছে। বছরের দ্বিতীয়ার্ধ নিয়ে আশা বাড়ছে।