—প্রতীকী চিত্র।
অর্থনীতি নিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচল পরিসংখ্যানে। এক দিকে জুলাইয়ের ৭.৪৪ শতাংশের থেকে অগস্টে কিছুটা মাথা নামালেও সেই অর্থে স্বস্তি দিল না খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার। গত মাসে তা কিছুটা কমে হল ৬.৮৩%। তবে তা নিয়ে কেন্দ্রকে ফের আক্রমণ করল বিরোধী কংগ্রেস। অন্য দিকে, জুলাইয়ে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার পৌঁছল পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ অঙ্কে (৫.৭%)।
সরকারি তথ্য বলছে, মূলত খাদ্যপণ্যের দাম কমাই মূল্যবৃদ্ধি নেমে আসার কারণ। যা জুলাইয়ের ১১.৫১ শতাংশের থেকে কমে গত মাসে হয়েছে ৯.৯৪%। কিন্তু এখনও খুচরো মূল্যবৃদ্ধি রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সহনসীমার (৬%) বেশ কিছুটা উপরে। ফলে অদূর ভবিষ্যতেও সম্ভাবনা তো থাকলই না। উল্টে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ফের ব্যারেলে ৯২ ডলারের দরজায় পৌঁছনোর জেরে দেশে জ্বালানির দাম নিয়ে চিন্তা থাকছে। আগামী দিনে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়লে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফের সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটতে পারে বলেও আশঙ্কা।
চড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এ দিন কেন্দ্রকে ফের তোপ দেগে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য— সব কিছুর খরচ বেড়েছে। অথচ আয় সে ভাবে বাড়ছে না। সব চেয়ে সমস্যায় সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমলে একমাত্র তাঁর হাতে গোনা শিল্পপতি বন্ধুদেরই আয় বেড়েছে। আবার বিরোধী দলটির প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খড়্গের টুইট, চড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে সংসার চালানো দুষ্কর হচ্ছে। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, গত পাঁচ বছরে ৪৭% মানুষই নিজেদের জীবন বিমা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ মোদী সরকার মুনাফা লুটছে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এই যদি মানুষের পকেটের হাল হয়, তা হলে এমন ‘অমৃত কাল’ কারও দরকার নেই।’’
এ দিকে কল-কারখানায় উৎপাদন, খনন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ভাল ফলের হাত ধরে জুলাইয়ে শিল্পবৃদ্ধির হার পৌঁছেছে ৫.৭ শতাংশে। এপ্রিল-জুনের আর্থিক বৃদ্ধির পরিসংখ্যানে উৎপাদন শিল্পে ঢিমে গতি নিয়ে সতর্ক করেছিল বিভিন্ন মহল। তবে জুলাইয়ে তা বেড়েছে ৪.৬%। খনন এবং বিদ্যুতে বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১০.৭% এবং ৮%। তবে অন্য পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাজে লেগে এমন মূলধনী পণ্যের উৎপাদন বেড়েছে ৪.৬% হারে। সরাসরি কমে গিয়েছে দীর্ঘ মেয়াদি ভোগ্যপণ্যের (২.৭%)। যা দেখে বিভিন্ন মহল বলছে, চাহিদা যে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে এই পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ। এর মধ্যেও অবশ্য কেন্দ্রকে স্বস্তি দেবে স্বল্প মেয়াদি ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন মাথা তোলা (৭.৪%) এবং পরিকাঠামো ও কাঁচামালের ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ১১.৪% এবং ৭.৬% বৃদ্ধি পাওয়া।