—প্রতীকী চিত্র।
এক দিকে খাদ্যপণ্যের চড়া দাম ও কমে যাওয়া রফতানি। অন্য দিকে দেশের বাজারে মাথা তোলা চাহিদা এবং কেন্দ্রের মূলধনী খরচ। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদদের একাংশের ধারণা, এপ্রিল-জুনের ৭.৮% থেকে কমলেও জুলাই-সেপ্টেম্বরে ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৮% হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দ্রুততম বৃদ্ধির শিরোপা ধরে রাখবে দেশ। তবে দুশ্চিন্তা কাটেনি অসমান চাহিদার কারণে। গ্রামাঞ্চলের বিক্রিবাটা শহরের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। অথচ সেখানেই বসবাস দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের। জরুরি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ঝাঁঝ কবে কমবে ও গ্রামের বাজার কবে ভাল বিক্রির মুখ দেখবে, স্পষ্ট বলতে পারছেন না তাঁরা।
১৭-২৭ নভেম্বর ৫৫ জন অর্থনীতিবিদকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। তাতেই উঠে এসেছে, জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশে অসমান বৃষ্টি এক ধাক্কায় মূল্যবৃদ্ধিকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে তার পরেও শহরাঞ্চলের চাহিদা গতিশীল রেখেছে অর্থনীতিকে। তাকে সঙ্গত করেছে পরিষেবার কর্মকাণ্ড এবং কেন্দ্রের মূলধনী খরচ। যে কারণে ওই তিন মাসে বৃদ্ধি হতে পারে ৫.৬%- ৭.৪%। গড়ে ৬.৮%। চলতি অর্থবর্ষে দাঁড়াতে পারে ৬.৪%। পরের বছর ৬.৩%। তবে মাথাব্যথা অসমান চাহিদা। অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, বিশ্বের বৃহত্তম শহরগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ভারতে। যেখানে চাহিদা বাড়ছে। আর জিডিপি বৃদ্ধির হিসাবে আমজনতার কেনাকাটার ভাগ ৬০%। তাই অঙ্কের হিসাবেই শহরাঞ্চলের বিক্রি তাকে ঠেলে তুলছে। কিন্তু তার বাইরের ভারত সেই গতির সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিই যার প্রধান কারণ।
চাহিদার এই ফারাক কমবে কবে? অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, দুই-তিন বছরের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। মর্গ্যান স্ট্যানলির ভারতীয় শাখার মুখ্য অর্থনীতিবিদ উপাসনা চাচরার কথায়, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামালে শহর ও গ্রামের চাহিদার ফারাক কমবে বলে ধারণা। তখন সামগ্রিক চাহিদা আরও মাথা তুলবে।’’ একাংশ মনে করছেন, এই ফারাক একই রকম থাকবে। সংখ্যায় কম হলেও কয়েক জন অর্থনীতিবিদের আশঙ্কা, তা আরও চওড়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, অতিমারির পরে যে রোজগার ও সম্পদের বৈষম্য বেড়েছে তা বহু সমীক্ষাতেই স্পষ্ট। শহরের অর্থনীতির সঙ্গে গ্রামের এঁটে উঠতে না পারার সেটাও বড় কারণ।
অন্য দিকে, মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস চলতি অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬% থেকে বাড়িয়ে ৬.৪% করেছে। বলেছে, দেশে বিক্রিবাটার অবস্থা ভাল। অন্যান্য আর্থিক সূচকগুলিও পোক্ত।