সাইরাস মিস্ত্রি। —ফাইল চিত্র
তিন বছর পর জয় সাইরাস মিস্ত্রির। টাটা সন্সের এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁকে সরানো এবং তাঁর জায়গায় এন চন্দ্রশেখরণকে বসানো বেআইনি ছিল— বুধবার এই রায় দিল দ্য ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল (এনসিএলএটি)। সাইরাসকে ওই পদে পুনর্বহালের নির্দেশও দিয়েছে ট্রাইবুনাল। ফলে ফের টাটা সন্সের মাথায় বসছেন সাইরাস মিস্ত্রি। রায়ের পর টাটা সন্সের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রায় পর্যালোচনা করে দেখছে সংস্থা।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে টাটা সন্সের এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয় সাপুরজি-পালনজি পরিবারের সদস্য সাইরাস মিস্ত্রিকে। চার বছর পর ২০১৬ সালের অক্টোবরে তাঁকে সেই পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থার বোর্ড অব ডিরেক্টর্স। পরে তাঁকে সংস্থার বোর্ড অব ডিরেক্টর্স থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে এনসিএলএটি-তে প্রথমে মামলা করে সাইরাস মিস্ত্রির সংস্থা সাইরাস ইনভেস্টমেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড এবং স্টারলিং ইনভেস্টমেন্টস কর্পোরেশন। কিন্তু সেই মামলা খারিজ করে দেয় এনসিএলএটি। তার পর সাইরাস নিজেই ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কোম্পানি আইন মেনে তাঁকে সরানো হয়নি। দীর্ঘ শুনানির পর শেষে সাইরাসের পক্ষেই রায় দিল এনসিএলএটি।
শিল্পমহলের খবর, ২০১৬ সালে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয় টাটা সন্সের বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের একাংশ। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন সাইরাস। তা ছাড়া সংস্থার নানা ‘বেনিয়ম’ চলছে বলে অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ছোট শেয়ার হোল্ডারদের মতামতকে গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। শিল্প ও বণিক মহলে কার্যত স্বীকৃত ছিল যে, এই সব কারণেই সেই সময় সাইরাসকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
টাটা সন্সে সাইরাসের পরিবারের ১৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এক বছর আগেই ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছিল, এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মিস্ত্রিকে তাঁর শেয়ার বিক্রির জন্য চাপ দিতে বা বাধ্য করতে পারবে না টাটা সন্স। বুধবার ট্রাইবুনাল জানিয়েছে, চার সপ্তাহ কার্যকর হবে না এই রায়। এই সময়ের মধ্যে রায় চ্যালেঞ্জ করে মামলা করতে পারবে টাটা সন্স।
টাটা সন্সের পক্ষ থেকে অবশ্য বিবৃতি দিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, টাটা সন্স এবং টাটার অন্যান্য সংস্থার শেয়ার হোল্ডারদের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কী ভাবে রায় দিল এনসিএলএটি। তা ছাড়া এই রায়ে আবেদনকারী অর্থাৎ সাইরাস মিস্ত্রির স্বস্তি মেলেনি বলেও দাবি সংস্থার।