প্রতীকী চিত্র
রাজকোষ ঘাটতি মাত্রাছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় নয়। করোনা-সঙ্কটের এই প্রবল অনিশ্চয়তার সময়ে হাতের টাকা খরচ না-করার প্রবণতাই এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের নগদ না-দেওয়ার কারণ বলে দাবি করলেন মোদী সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন।
শুক্রবার বণিকসভা ভারত চেম্বারের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে তিনি মেনেছেন, এই সঙ্কট অর্থনীতির নয়, স্বাস্থ্যের। তাই প্রতিষেধক না-বেরনো বা মানুষ এই রোগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া নিয়ে নিশ্চিত না-হওয়া পর্যন্ত অনিশ্চয়তা থাকবেই। শুধু আর্থিক দাওয়াইয়ে যোঝা শক্ত। কিন্তু সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, দরিদ্রদের হাতে কেন্দ্র টাকা দেয়নি, কারণ তাঁরা এখন তা খরচ না-করে তুলে রাখতে চাইবেন। ফলে তাতে চাহিদা ফেরার সম্ভাবনা সামান্য।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন— অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে পরিযায়ী শ্রমিক, কাজ হারানো কর্মী, দরিদ্রদের হাতে মাসে কিছু টাকা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন অনেকেই। কিন্তু কেন্দ্র এনেছে সহজ ঋণের সুযোগে ঠাসা ২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ। নগদ নয়। সুব্রহ্মণ্যনের যুক্তি, “লকডাউনে জন-ধন অ্যাকাউন্টে সঞ্চয় বেড়েছে ১৮,০০০ কোটি। অর্থাৎ, টাকা জমাতে চাইছেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকারাও। বিশ্বের প্রায় সর্বত্র খাদ্যদ্রব্য ও জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য কিছু কিনতে চাইছেন না মানুষ। টাকা তুলে রাখছেন। ফলে চাহিদা তলানিতে।” উপদেষ্টার ইঙ্গিত, পরে অবস্থা বুঝে চাহিদা চাঙ্গা করতে নগদ জোগানোর দরজা খোলা রাখতে চায় কেন্দ্র। যদিও তত দিন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা বা আতান্তরে পড়া মানুষ কোন খড়কুটো আঁকড়ে ভেসে থাকবেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
এ দিনই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির ডিরেক্টর রথীন রায় ইন্ডিয়ান চেম্বারের এক সভায় বলেন, শুধু কেন্দ্র বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে অর্থনীতিকে বাঁচানো কঠিন। বেসরকারি উদ্যোগকে হাল ধরতে হবে। স্টেট ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষের দাবি, ‘‘করোনা এমন সময় থাবা বসাল, যখন অর্থনীতি প্রায় মন্দায়। কবে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে, তা অনিশ্চিত।’’ লকডাউনের ধাক্কায় বেকারত্ব বাড়ায় সমস্যা জটিল হয়েছে, দাবি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিক রিলেশন্সের ডিরেক্টর-সিইও রজত কাঠুরিয়ার।