প্রতীকী ছবি।
‘রক্তক্ষরণ’ এত বেশি যে, ‘মহারাজ’-কে বাঁচানো অসম্ভব। এয়ার ইন্ডিয়া (এআই) বিক্রির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনায় জল ঢেলে সংসদে দাঁড়িয়ে ফের এ কথা জানালেন বিমান পরিবহণমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী।
মঙ্গলবার লোকসভায় বিমান সংশোধন বিল নিয়ে আলোচনায় মন্ত্রী বলেন, দিনে এআইয়ের গড় লোকসান ২৬ কোটি টাকা। করোনার কামড়ে তা আরও বাড়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে সংস্থার দায় কেন্দ্রের পক্ষে আর টানা সম্ভব নয়। বিশেষত ওই সংস্থাকে চাঙ্গা করতে যেখানে দফায়-দফায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি ঢেলেও লাভ হয়নি। উপরন্তু জমেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা পুঞ্জীভূত লোকসানের বোঝা। তাঁর মতে, সংস্থাটির পিছনে নতুন করে সাধারণ মানুষের করের টাকা ঢালা অর্থহীন। এরই মধ্যে করোনার জেরে আপৎকালীন আর্থিক সাহায্যের দাবি করেছেন এআইয়ের পাইলটেরা।
কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী থেকে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়— অনেকেরই আর্জি ছিল, জাতীয় বিমান পরিবহণ সংস্থা হিসেবে দেশের দীর্ঘ দিনের গর্ব এআইকে পুরোপুরি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কথা বিবেচনা করুক কেন্দ্র। প্রশ্ন ছিল, এখনও করোনা সংক্রমিত বিভিন্ন দেশ থেকে অনাবাসী ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে যেখানে সেই এআইয়েরই খোঁজ পড়ছে, সেখানে কী ভাবে তাকে বিক্রির কথা বলে কেন্দ্র?
হরদীপের উত্তর, ‘‘কূটনীতিক হিসেবে ৪০ বছরের কেরিয়ারে ব্যক্তিগত ভাবে এয়ার ইন্ডিয়ায় সফর করতেই পছন্দ করেছি। ১২০টি বিমান, দেশে ও বিদেশে যথাক্রমে ৮০ ও ৫০টি গন্তব্যে উড়ান থাকা এই সংস্থা সম্পদ হিসেবেও ভাল।’’ কিন্তু তা-ও কেন এই সংস্থার রাশ সরকারের হাতে রাখা যুক্তিযুক্ত নয়, তা বোঝাতেই ক্ষতির হিসেব তুলে ধরেন তিনি। দাবি করেন, দামের গলাকাটা প্রতিযোগিতায় যেখানে প্রতি টাকা বাঁচাতে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলিকে চোখের পলকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সেখানে টেন্ডার-লাল ফিতের ফাঁসে আটকে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির আঁচড় কাটা শক্ত। তেমন যুক্তিযুক্ত নয় করের টাকা গুনে সরকারের বিমান চালানোও। মূলত এই কারণে এখন প্রায় কোনও দেশেরই রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবহণ সংস্থা নেই বলেও তাঁর দাবি।