কাজের বাজারকে চাঙ্গা করে গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ঘটাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রতীকী ছবি।
মোদী সরকার দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে দাবি করছে ঠিকই। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি যে এখনও কাহিল, তা স্পষ্ট সেখানে ঝিমিয়ে থাকা চাহিদার পরিসংখ্যানে। দু’চাকার গাড়ি থেকে ভোগ্যপণ্য, অনেক কিছুরই বিক্রিবাটা কমেছে। বিভিন্ন রিপোর্টে ধরা পড়েছে কাজের বাজারের বেহাল দশাও। যার মূল কারণ, কৃষি বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলির চাঙ্গা হতে না পারা। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় চলতি অর্থবর্ষের বাকি সময়ের জন্য গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের বরাদ্দ প্রায় ১৮% বাড়াতে পারে মোদী সরকার। মূলত ১০০ দিনের কাজ এবং কম দামি বাড়ি তৈরির প্রকল্পে খরচ করা হতে পারে ওই টাকা। লক্ষ্য, কাজের বাজারকে চাঙ্গা করে গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ঘটানো।
এই অর্থবর্ষের বাজেটে গ্রামের বিভিন্ন প্রকল্পে ১.৩৬ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র। কমানো হয় ১০০ দিনের কাজের টাকা। সূত্রের খবর, সেই বরাদ্দই বাড়িয়ে ১.৬০ লক্ষ কোটি করা হতে পারে। অর্থ এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে সরকারি মহলের একাংশের যুক্তি, অনেক ক্ষেত্রে শুরুর দিকে এগুলির বরাদ্দ কম থাকে। অর্থবর্ষের প্রথমার্ধ পার করে চাহিদা অনুযায়ী বাড়ানো হয়।
সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য দাবি, বেকারত্বের প্রশ্নে কেন্দ্র চাপে। ক্রমাগত তোপ দাগছে বিরোধীরা। মঙ্গলবারও বিজেপিকে বিঁধে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত বলেছেন, কাজের অভাবই সব থেকে দুশ্চিন্তার বিষয়। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষায় প্রকাশ, অতিমারি পেরিয়ে দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হতে থাকলেও কর্মসংস্থানে তার প্রভাব বেশ কম। বেকারত্ব টানা ৭ শতাংশের উপরে। বাড়তি উদ্বেগ গ্রামাঞ্চলের কাজের বাজার। যেখানে অক্টোবরেও বেকারত্ব ছিল ৮.০৪%। গত ২০ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে ৮.৩১%।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গাঁ-গঞ্জে কৃষির বাইরে রোজগারের বড় ভরসা ১০০ দিনের কাজ। হাতে আসা সেই নগদ বিক্রি বাড়িয়ে সচল রাখে গ্রামীণ অর্থনীতিকে। কিন্তু বাজেট বরাদ্দ কমায় তেমন কাজের জোগান কমেছে। যার ধাক্কা সইছে অর্থনীতি। অনেকের ধারণা, অস্বস্তি বাড়তে পারে আঁচ করেই হয়তো তড়িঘড়ি গ্রামোন্নয়নের বরাদ্দ বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার।