ফের দাম বাড়ছে স্মার্ট ফোনের।
টাকা বাঁচাতে গিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্ত। আর তার ফল ভুগছে আম জনতা। টান পড়ছে পকেটে। আজ থেকে ফের দাম বাড়ছে স্মার্টফোনের। মহার্ঘ হতে চলেছে টেলি পরিষেবার খরচও। আমদানি শুল্ক অত্যাবশ্যক নয়, এমন বেশ কিছু পণ্যের উপর নতুন করে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তার জেরে উৎসবের মুখে পকেট আরও ফাঁকা হওয়ার দুশ্চিন্তায় সাধারণ মানুষ।
রোজই নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে টাকা। ডলারের সাপেক্ষে কমছে টাকার বিনিময় মূল্য। কমতে কমতে এক ডলারের সাপেক্ষে টাকা পৌঁছে গিয়েছে ৭৩.৬০ পয়সারও উপরে। একাধিক পদক্ষেপেও রোখা যায়নি টাকার পতন। এই পরিস্থিতিতে ফের এক টোটকা। অত্যাবশ্যক নয় এমন পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। তবে কত শতাংশ হারে বাড়ানো হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কার্যকর হচ্ছে আজ থেকেই।
এতেই অশনি সঙ্কেত স্মার্ট ফোন এবং টেলি পরিষেবায়। নির্দিষ্ট করে না হলেও বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মহার্ঘ হতে চলেছে স্মার্ট ফোন, স্মার্ট ওয়াচ, টেলিফোন, অপটিক্যাল ফাইবার, সুইচ-ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানের সামগ্রী। এ ছাড়া পরিষেবা ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে টেলি ও ইন্টারনেট পরিষেবায়। টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলিও বাড়াতে পারে ভয়েস কল এবং ইন্টারনেটের খরচ।
আরও পড়ুন: ১৩৬ যাত্রী নিয়ে পাঁচিল ভেঙে উড়ে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান!
এর জেরে বৈদেশিক বাণিজ্যেও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। স্যামসাং, নোকিয়া, অ্যাপেলের মতো সংস্থার মোবাইল হ্যান্ডসেট এবং জ়েডটিই, এরিকসন, সিসকো সিস্টেমস, হুয়াইয়ের মতো নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থার জিনিসপত্র আমদানির খরচ বাড়তে পারে। তার প্রভাব পড়বে টেলি ও ইন্টারনেট পরিষেবাতেও। তবে একটাই আশার কথা, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে যে সব সংস্থা স্মার্ট ফোন তৈরি করে, তাদের কিছুটা সুবিধা হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ক্রমাগত টাকার পতনের জেরে আর্থিক ঘাটতি বাড়ছে। অন্যদিকে রাজকোষে কমছে ডলারের জোগান। শেয়ার বাজারের পরিস্থিতিও ভাল নয়। সব মিলিয়ে কার্যত অর্থনৈতিক মন্দার মতো পরিস্থিতি। তার জেরেই আমদানি শুল্ক চাপিয়ে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। অন্যদিকে টেলিকম রিসার্চ সংস্থা ‘কাউন্টারপয়েন্ট’-এর কর্ণধার মনে করছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তে টেলি ব্যবসা মার খাবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে আগামী ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকতে পারে ইন্টারনেট পরিষেবা!
শুধুমাত্র এ বছরই ডলারের তুলনায় টাকার দাম কমেছে ১৪ শতাংশ। একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েও ঠেকানো যায়নি এই পতন। গত ডিসেম্বরেই ইলেকট্রনিক্স পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। বাজেটে ফের এক দফা শুল্ক চাপানোয় বেড়েছিল প্রায় ৪০টি বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দাম। এর পর গত মাসেও অনত্যাবশ্যকীয় ১৯টি পণ্যে কর বেড়েছিল। কিন্তু তার পরও টাকার নিম্নগতি কমেনি। নতুন এই সিদ্ধান্তেও যে বিরাট কোনও পরিবর্তন আসবে, এমন কোনও আশা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।