—প্রতীকী ছবি।
কৃত্রিম মেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এ লাগাম পরাতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুক্রবার চর্চায় থাকা চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’-র উদ্ভাবক সংস্থা ওপেনএআই-এর কর্ণধার স্যাম অল্টম্যান দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই এ কথা জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।
অল্টম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পরে ওপেনএআই-এর সঙ্গে ‘সব রকম যৌথ প্রচেষ্টা’-কে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ভয়ে ইতালি থেকে শুরু করে চিন, রাশিয়ার মতো একাধিক দেশ চ্যাটজিপিটি-র উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকার প্রযুক্তিটি নিয়ে কী ভাবছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। উত্তরে চন্দ্রশেখরের দাবি, কৃত্রিম মেধাকে নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্র। লক্ষ্য রাখা হবে, যাতে তা দেশের ডিজিটাল দুনিয়ার নাগরিকদের ক্ষতি করতে না পারে।
কৃত্রিম মেধা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের অন্যতম প্রতিযোগী বলে এ দিন জানিয়েছেন কেন্দ্র মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। আগামী দিনে এর ধাক্কায় বহু মানুষের চাকরি যাবে বলে এমনিতেই সংশয় রয়েছে। তার উপরে চ্যাটজিপিটি নামক চ্যাটবট চলে আসায় সেই আতঙ্ক বেড়েছে। নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, সাধারণ চ্যাটবট হল এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় সক্ষম। কিন্তু চ্যাটজিপিটি মানুষের হয়ে চিঠি, গান, গল্প, কবিতা এমনকি গবেষণাপত্র লিখে দিতে পারে। কোনও বিষয়ে নেটে যাবতীয় তথ্য খুঁজতে ও তা নিয়ে প্রবন্ধ লেখাতে দক্ষ। সর্বোপরি কম্পিউটারকে দিয়ে কাজ করানোর নির্দেশ বা প্রোগ্রাম-ও লিখতে পারে এটি। রাজীব জানান, এটা ঠিক যে চাকরি যাওয়ার ভয় আছে। তবে এখন নয়, তা হতে পারে ৫-৭ বছর পরে।
কেন্দ্র কৃত্রিম মেধায় নিয়ন্ত্রণ জারি করতে চায় জেনেও এ দিন অবশ্য তাতে আপত্তি জানাননি অল্টম্যান। নিজেই দিল্লিতে অনুষ্ঠানে বলেছেন, স্বনিয়ন্ত্রণ জরুরি। কিন্তু কৃত্রিম মেধার যা ক্ষমতা, তাতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হাতেও সবটা ছাড়া উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অল্টম্যান। তাঁর বক্তব্য, ওপেনএআই সংস্থা নিজেই নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখছে। সেই কারণে আট মাস সময় নিয়ে চ্যাটজিপিটি নিরাপদ কি না যাচাই করে, তার পরেই তা বাজারে এনেছেন।
এ দিকে রাজীবের বক্তব্য, দেশে এখন ৮৫ কোটি মানুষ নেট ব্যবহার করেন। ২০২৫-এ তা ১২০ কোটি হতে পারে। অথচ অসৎ উদ্দেশ্যে, বিনা অনুমতিতে ব্যক্তিগত তথ্য নেটে দেওয়ার ঘটনা বাড়ছে। আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্র তা আটকাতে পদক্ষেপ করবে।