ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধির আঁচ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কমবে বলে আশা করছে মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক। সেই সঙ্গে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের কাজও।
এত দিন আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি আসতে সাহায্য করার জন্য সুদের হার কম রাখার নীতি নিয়ে চলছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে শেষ পর্যন্ত সুদ বাড়িয়েছে তারা। আশঙ্কা, আগামী দিনে আরও বাড়াতে হবে। এই পরিস্থিতিতে আজ কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব অজয় শেঠের দাবি, সরকার এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, দু’পক্ষের পদক্ষেপেরই ফল মিলবে এ বার। আশা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার অনেকটা মাথা নামাবে। বিশ্ব বাজারে পণ্যের দাম যেখানে উঠেছিল, মে মাসে তার থেকে বেশ কিছুটা কমেছে।
তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশার কথা জানিয়ে সরকার কি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে সুদ বাড়ানোর প্রয়োজন নেই বলে বার্তা দিতে চাইছে? বিশেষত ক’দিন পরেই আরবিআইয়ের ঋণনীতি বৈঠকে যেখানে ফের সুদের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। সচিব অবশ্য এর জবাব দেননি।
মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে আরবিআই যেমন সুদের হার বাড়িয়েছে, তেমনই কেন্দ্র পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমাতে ছেঁটেছে উৎপাদন শুল্ক। তেলে শুল্ক কমানো এবং গরিবদের জন্য রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি ঘোষণার ফলে চলতি অর্থবর্ষে সরকারের প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হবে। লোহা, ইস্পাত, প্লাস্টিকের শুল্কও কমানো হয়েছে। আজ অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, এ জন্য আরও ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা। বিপিসিএল বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে ঘরে টাকা তোলার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। ক্রেতার অভাবে আপাতত ওই প্রকল্প তাকে তুলে রাখা হয়েছে।
তবে আজ অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক পরিষেবা সচিব সঞ্জয় মলহোত্র জানিয়েছেন, দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রির আগাম পদক্ষেপগুলি সেরে রাখা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গত বছর এই ঘোষণা করেছিলেন। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, আগামী বাদল অধিবেশনে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিল আনা হবে। আজ মলহোত্র জানিয়েছেন, “অর্থমন্ত্রী সংসদেই বলেছেন ব্যাঙ্ক বিলগ্নিকরণের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা করা হবে। তারই প্রক্রিয়া চলছে।”
বিল পাশ করানো হলেও চলতি অর্থবর্ষে বেসরকারিকরণ সম্ভব কি না, তা নিয়ে সরকারের মধ্যেই প্রশ্ন বিস্তর। কারণ বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা এবং মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কায় আর্থিক বৃদ্ধি এবং বেসরকারিকরণ, দু’টি বিষয় নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অজয়ের অবশ্য দাবি, ভারত বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে আর্থিক বৃদ্ধির নিরিখে প্রথম স্থানেই থাকবে। সেই হার ৭.৫ শতাংশের কম হবে বলে মনে করছে না কোনও মূল্যায়ন সংস্থাই। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।