পুরনো ক্ষেত্রগুলি থেকে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ঠিক হবে আমদানিকৃত অশোধিত তেলের দামের নিরিখে। ফাইল ছবি।
সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী শিবির বার বার অভিযোগ তোলেন, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়লে দেশে জ্বালানি দামি হয়। কিন্তু দাম কমার প্রতিফলন তেমন পড়ে না। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্তত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে উৎপাদিত পরিবহণ জ্বালানি (সিএনজি) এবং পাইপবাহিত রান্নার গ্যাসের (পিএনজি) ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আন্তর্জাতিক দামের সুবিধা দিতে তৎপরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে কেন্দ্র। কার্যত জ্বালানি দু’টির চড়া দরে রাশ টানতেই বৃহস্পতিবার মোদী সরকার প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নির্ধারণের নতুন সমীকরণে সম্মতি দিয়েছে। শুক্রবার তা মেনে আপাতত এপ্রিলের জন্য দাম ঘোষণা করে তেল মন্ত্রকের অধীন ‘পেট্রোলিয়াম প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যানালিসিস সেল’ (পিপিএসি)। একই সঙ্গে জানায়, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমলে দ্রুত তার সুবিধা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে তৈরি হবে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা।
কেন্দ্র বৃহস্পতিবার বলেছিল, পুরনো ক্ষেত্রগুলি থেকে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ঠিক হবে আমদানিকৃত অশোধিত তেলের দামের নিরিখে। বিভিন্ন সূত্র থেকে ভারত যে তেল আমদানি করে, তার দামের ১০% পর্যন্ত হতে পারবে সেই দর। যদিও তার ঊর্ধ্বসীমা ১০ লক্ষ ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটে ৬.৫ ডলারের বেশি হবে না। ন্যূনতম দাম ৪ ডলার।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, জ্বালানি হিসাবে গ্যাসের ব্যবহার বাড়াতে চায় মোদী সরকার। কিন্তু অন্যান্য জ্বালানির মতো সেটির দামও বিপুল বেড়েছে। আর তেল-গ্যাসের চড়া দর যে লোকসভা ভোটের আগে মাথাব্যথার কারণ হতে পারে, তা মুখে স্বীকার না করলেও শাসক দলের ভাবনায় স্পষ্ট। ওই মহলের মতে, তাই তড়িঘড়ি প্রাকৃতিক গ্যাসের দামে সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত হল। দু’বছর পর্যন্ত দরের ঊর্ধ্বসীমা স্থির রাখাতেও সতর্ক পদক্ষেপের আভাস।
এ দিন পিপিএসি জানিয়েছে, নতুন নীতি মেনে ৮ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি ১০ লক্ষ বিটিইউ গ্যাসের দাম ৭.৯২ ডলার। তবে সেই নিয়মেই ওএনজিসি এবং অয়েল ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে দামের ঊর্ধ্বসীমা ৬.৫ ডলার। আগে বছরে দু’বার দাম সংশোধন হত। এ বার হবে রান্নার গ্যাসের (এলপিজি) মতো প্রতি মাসে। একটি পোর্টালে সিএনজি এবং পিএনজির দামে নজরদারির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের। দামে বদল হলে দ্রুত তা কার্যকর হবে।
অন্য দিকে উপদেষ্টা সংস্থা ক্রিসিল রেটিংস বলেছে, গ্যাসের দাম নিয়ে গঠিত কিরীট পারিখ কমিটির সুপারিশ কিছুটা মেনে তা ধার্য করার পদ্ধতিতে কেন্দ্র বদল আনল বটে। তবে ২০২৭ সালের মধ্যে এই ক্ষেত্রটির বিনিয়ন্ত্রণে কমিটির সুপারিশ নিয়ে কিছু জানায়নি।