প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল (ব্রেন্ট ক্রুড) পেরোল ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলারের সীমা। তবুও ভারতে ৮৩ দিন ধরে পেট্রল-ডিজ়েলের দর বিন্দুমাত্র নড়ল না। গত বছর ব্রেন্ট ৮৫-তে ওঠা পর্যন্ত দেশে জ্বালানির দাম বাড়তে বাড়তে কী ভাবে লিটারে ১০০ টাকা পেরিয়েছিল সে কথা মনে করিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল যখন এই ‘স্বস্তির’ জন্য ব্যালট বাক্সের বাধ্যবাধকতার দিকে আঙুল তুলছে, তখন কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত তাতেই সিলমোহর দিল।
উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটগ্রহণ ৭ মার্চ মিটে যাচ্ছে। ১০ মার্চ ফল বেরোবে। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, বিশ্ব বাজারে তেল সাত বছরে সর্বোচ্চ। ফলে দেশেও জ্বালানির দর বাড়তে পারে ১১ মার্চ। তবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়ে যাওয়ায় ৭ মার্চ রাত থেকে দাম বাড়ালেও সমস্যা নেই। ১০ বা ১১ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার পড়ছে না। আপাতত আমদানি খরচের পুরোটাই বইছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। কিন্তু খুব বেশি দিন সেটা চালানো সম্ভব হবে না।
একে অশোধিত তেলের উৎপাদন প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়ায়নি জ্বালানি রফতানিকারী দেশগুলি। অথচ ওমিক্রনের প্রভাব কিছুটা হালকা হওয়ায় তার চাহিদা বাড়ছে। এর মধ্যে জোগানে আরও কোপ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার (রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী) সংঘাতের আবহে। যে কারণে বৃহস্পতিবার ব্রেন্ট ক্রুড এক সময়ে ছুঁয়ে ফেলে ৯০.৯৫ ডলার।
বিরোধীদের তোপ, সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে তেলের দাম মোদী সরকারের ফায়দা তোলার ঘুঁটি। বিশ্ব বাজারে তেল সস্তা হলে ভারতে দাম তেমন কমে না। উল্টে সেই সুযোগে কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়ে রাজকোষ ভরে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় দাম চড়লে দেশে সংস্থাগুলি সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ায়। শুধু ভোট থাকলে যে তা হয় না, সেই প্রমাণ অতীতে গুজরাত থেকে কর্নাটক, এমনকি গত বছর পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোট। প্রতি বারই দামের দৌড় শুরু হয়েছে সেই পর্ব মেটার পরে। তাদের আশঙ্কা, এ বারও সেটাই হতে চলেছে।
ফলে তেলের আঁচ বৃদ্ধির হাত থেকে সাময়িক বাঁচতে আমজনতার ভরসা ভোটই।