সর্ষের তেলের খুচরো দাম ২০১৭-র ডিসেম্বরে ছিল কেজি প্রতি ১০৬.৬৩ টাকা। গত মাসে পৌঁছেছে ১৭৬.৩৮ টাকায়। মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ৬৬%। প্রতীকী ছবি।
মূল্যবৃদ্ধির কামড় আলগা হওয়ার হিসাব এল সরকারের পরিসংখ্যানে। দেখা গেল, নভেম্বরে খুচরোর মতো পাইকারি বাজারেও অপ্রত্যাশিত ভাবে তার হার ৬ শতাংশের নীচে নেমেছে। সস্তা হয়েছে খাদ্যপণ্য। তবে চড়তে থাকা সংসার খরচ কী ভাবে সাধারণ গৃহস্থকে বিপাকে ফেলেছে তা-ও এ দিন স্পষ্ট হয়েছে খোদ সরকারের দেওয়া হিসাবেই। সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে তারা জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে সর্ষের তেলের দাম প্রায় ৬৬% বেড়ে গিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির রিপোর্ট বলছে, এখনও চড়া গম, ডাল ও দুগ্ধজাত জিনিস। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অবশ্য পণ্যের দাম নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে মূল্যবৃদ্ধির ৬ শতাংশের নীচে নেমে আসাকে সরকারের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গত বছর একই সময়ের উঁচু হারের নিরিখেও তা এ বার এত বেশি নিচু দেখাচ্ছে।
গত মাসে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৫.৮৮%। ১১ মাসে সর্বনিম্ন। বুধবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে প্রকাশ, পাইকারি বাজারে তা নেমেছে ৫.৮৫ শতাংশে। যা ২১ মাসে সব থেকে কম। এর প্রধান কারণ সস্তা হওয়া খাদ্য, জ্বালানি এবং তৈরি পণ্য। আরবিআই সুদের হার ঠিক করার আগে দেখে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নীচে কি না। ফলে দুই বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির হারের এই সীমার নীচে নামা সরকারের পক্ষে স্বস্তির।
যদিও অস্বস্তি পুরোপুরি এড়াতে পারেনি কেন্দ্র। লোকসভায় বাজেট অতিরিক্ত বরাদ্দ নিয়ে আলোচনায় আজ বিরোধী সাংসদরা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তাদের নিশানা করেছিলেন। ভোজ্যতেল নিয়ে তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারীর (দেব) প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রই জানায়, সর্ষের তেলের খুচরো দাম ২০১৭-র ডিসেম্বরে ছিল কেজি প্রতি ১০৬.৬৩ টাকা। গত মাসে পৌঁছেছে ১৭৬.৩৮ টাকায়। মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ৬৬%। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রোজগারে কোভিডের ধাক্কা সয়ে আসা সাধারণ মানুষের পক্ষে এ ভাবে চড়ে যাওয়া দর বহন করা কঠিন। বিশেষত জ্বালানি-সহ অন্যান্য জিনিসও যেখানে আগের থেকে দামি হয়েছে।
সংসদে বিরোধীদের সামলাতে যদিও নির্মলা খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হিসাবকেই হাতিয়ার করেন। দাবি করেন, মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধানমন্ত্রী, তাঁর মন্ত্রীগোষ্ঠী এবং অফিসারেরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর নানা ভাবে পদক্ষেপ করছেন। সেই কারণেই তার হার সহনসীমার মধ্যে নেমেছে। সাধারণ মানুষের জন্য তাকে আরও নামিয়ে আনার চেষ্টা করবে সরকার।
খাদ্যশস্য, ডাল ও ভোজ্যতেলের চড়া দর নিয়ে অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীগোষ্ঠী নিয়মিত দামে নজরদারি করছেন। খাদ্যশস্য, ডাল যথেষ্ট মজুত রয়েছে। ডালের দাম বাড়লেই প্রয়োজন মতো বাজারে ছাড়া হয়েছে। যে কারণে খাদ্যপণ্যের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ১.০৭ শতাংশে নেমেছে। ২০.০৮% কমেছে আনাজও। অক্টোবরে তার মূল্যবৃদ্ধি ছিল ১৭.৬১%।