ভোট বছরে মোদী সরকারকে এমনিতেই চিন্তায় রেখেছে তেল ও ডলারের দাম বৃদ্ধি। বর্ষপূর্তি নিয়ে মাতামাতি করলেও, পিছু ছাড়েনি জিএসটি ঘিরে ওঠা হাজারো অভিযোগ। এ সব নিয়ে নাগাড়ে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। এই অবস্থায় কেন্দ্রের মাথাব্যথা বা়ড়াল আরও দুই কাঁটা। গত অর্থবর্ষে ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি বৃদ্ধির হার পাঁচ বছরের তলানিতে নামা। আর ২০১৮-র প্রথমার্ধে দেশের মূলধনী বাজার থেকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির পুঁজি তুলে নেওয়ার অঙ্ক ১০ বছরের সর্বোচ্চ হওয়া।
শিল্প নীতি ও উন্নয়ন দফতরের হিসেব, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি মাত্র ৩% বেড়ে হয়েছে ৪,৪৮৫ কোটি ডলার। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, কেন্দ্র সংস্কারের ঢাক পেটালেও এর থেকে স্পষ্ট বিদেশি সংস্থাগুলি ভারতে পুঁজি ঢালতে এখনও স্বচ্ছন্দ নয়। ফলে তাদের টানতে ব্যবসার পরিবেশ আরও সহজ করায় মন দিতে হবে কেন্দ্রকে।
আবার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও ২০১৮ সালের প্রথম ছ’মাসে ভারত থেকে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা তুলেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিশ্ব বাজারের তেলের দাম বাড়াই যার মূল কারণ। যার জেরে তেল আমদানি খাতে ভারতের বিল চড়া হওয়ার ভয় আছে। আশঙ্কা রয়েছে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেন ও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ার। তবে লগ্নি তুলে নেওয়ার পেছনে বিশ্ব জুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের ত্রাস ও মার্কিন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোকেও দায়ী করছেন অনেকে। একই সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, ভারতের অর্থনীতি যদি তেমন ভাল অবস্থায় থাকত, তবে সত্যিই সংস্থাগুলি এ ভাবে মুখ ফিরিয়ে নিত কি?
এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে বিদেশি লগ্নিকারীরা যে ভাবে ভারতকে দূরে ঠেলছে, তাতে সিঁদুরে মেঘই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।