প্রতীকী ছবি
প্রথমে শেয়ার বাজারে এক শ্রেণির বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার উপরে বাজেটে বসানো সারচার্জ প্রত্যাহার। গাড়ি শিল্পের চাহিদা বাড়াতে একগুচ্ছ ঘোষণা। তারপরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ। এ বার অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে আবাসন শিল্পকে সুরাহা দিতে চাইছে মোদী সরকার।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আবাসন ক্ষেত্রের সমস্যা বুঝতে বৈঠকে বসেছিলেন সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে। সরকারি সূত্রের খবর, এখন অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে আবাসন মন্ত্রকের আলাপ-আলোচনা চলছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কর্তাদের নিয়ে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে এই সপ্তাহেই কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা হতে পারে।
বস্তুত, তিন বছর আগে নোট বাতিলের পর থেকেই আবাসন, ফ্ল্যাট-বাড়ির বিক্রিবাটা শ্লথ হয়েছে। নতুন ফ্ল্যাটের বিক্রি কমেছে। আইনি জটিলতা, অর্থের অভাবে বহু প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে ফ্ল্যাটের ক্রেতা থেকে প্রোমোটার, সকলের অর্থই আটকে থাকছে।
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আবাসন নির্মাতা সংস্থাগুলি দাবি করেছে, সঙ্কটে পড়া প্রকল্পগুলিকে সাহায্যের জন্য একটি তহবিল তৈরি হোক। তা হলে নগদের সমস্যা মিটবে। ঋণের ক্ষেত্রে ভর্তুকির প্রকল্প ফের খতিয়ে দেখা হোক। বদলানো হোক সাধ্যের মধ্যে থাকা আবাসনের সংজ্ঞা। কারণ তাদের মতে, মেট্রো শহরে জমির বিপুল দামের দরুন ৪৫ লক্ষ টাকার মধ্যে সাধ্যের মধ্যে থাকা (অ্যাফর্ডেবল) ফ্ল্যাট তৈরি সম্ভব নয়। ৫৫ থেকে ৬০ লক্ষের ফ্ল্যাটকে কম দামি ফ্ল্যাটের আওতায় এনে সরকারি সুবিধা দেওয়া হলে, সেগুলির চাহিদা বাড়বে। সরকারি সূত্রের খবর, এই সংজ্ঞা রদবদল হতে পারে। একই সঙ্গে তহবিল তৈরি নিয়েও ভাবনা চলছে।
অ্যানারক প্রপার্টি উপদেষ্টা সংস্থার চেয়ারম্যান অনুজ পুরীর মতে, ২০১৪ সালে আবাসনের বিক্রি তুঙ্গে উঠেছিল। প্রধান সাতটি শহরে প্রায় ৩.৫ লক্ষ ফ্ল্যাট বিক্রি হয়। ২০১৮ সালে ২.২৫ লক্ষ। আর ২০১৯-এর প্রথম ছ’মাসে ১.৪৭ লক্ষ ফ্ল্যাট বিক্রি হলেও, ২০১৪-র জায়গায় পৌঁছতে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এর দ্বিগুণ বেচতে হবে। তাঁর মতে, প্রোমোটারদের মুনাফা কমা, কাহিল চাহিদা, কর্মসংস্থান তেমন না বাড়া ও তরুণ প্রজন্মের ভাড়ায় থাকা নিয়ে মানসিক সমস্যা না হওয়াই এই শিল্পে সঙ্কটের অন্যতম কারণ। কেন্দ্রের দাবি, ধার দিতে ঋণদাতা সংস্থাগুলিকে টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শিল্পের প্রশ্ন, চাহিদা না থাকলে ধার নেবে কে!