প্রতীকী ছবি।
গত বছরের শেষটা ভাল গেল না গাড়ির বিক্রেতা (ডিলার) সংস্থাগুলির। উৎসবের মরসুমে পা রেখে কয়েক মাস শো-রুমগুলি থেকে সার্বিক বিক্রি বেশ খানিকটা চাঙ্গা হয়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বরে সেই চাহিদা ফের ঝিমিয়ে পড়ল। সারা বছরের হিসাবেও ২০১৯ সালের ব্যবসাকে ছাড়াতে পারেনি ২০২২। বৃহস্পতিবার গাড়ি বিক্রির এই সমস্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করে ডিলারদের সংগঠন ফাডার বার্তা, আর্থিক অনিশ্চয়তা, গাড়ির দাম বৃদ্ধির মতো নানা কারণে চলতি অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যবসার হাল নিয়ে সতর্কই থাকছে তারা।
সরকারি পরিসংখ্যানকে উদ্ধৃত করে ফাডা জানিয়েছে, গত ডিসেম্বরে সার্বিক ভাবে গাড়ি বিক্রি ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় কমে গিয়েছে ৫.৪০%। ২০১৯ এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরের সঙ্গে তুলনা করলে বিক্রি কমার হার আরও বেশি, যথাক্রমে ১১.৮৯% ও ২১.১৫%। তবে গোটা বছরের হিসাবে চোখ রাখলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। গত বছরের বিক্রি তার আগের দু’বছরের (২০২০, ২০২১) থেকে বেড়েছে যথাক্রমে ১৭.১৭% ও ১৫.২৮%। যদিও ২০১৯-এর তুলনায় তা ৯.৮১% কম। সে বার দেশ কাবু ছিল অর্থনৈতিক ঝিমুনিতে। পরের বছর কোভিড সংক্রমণে ধাক্কা খায় ব্যবসা। তার প্রভাব কাটার আগেই বিশ্ব জোড়া আর্থিক সঙ্কট, পণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধি, গাড়ি তৈরির খরচ বাড়ায় তার দাম বৃদ্ধি এবং কিছু যন্ত্রাংশের অভাবে নির্মাতা সংস্থাগুলির উৎপাদন কমাতে হওয়ার মতো বিষয় ব্যবসার পথে কাঁটা বিছায়। যা নিয়ে আগামী বছরও শুরু থেকেই সাবধান থাকছেন ডিলারেরা। ফলে সব মিলিয়ে গাড়ি বাজার বাস্তবে আদৌ ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত দু’চাকার বিক্রি যেহেতু এখনও কম।
যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি অবশ্য উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। বেড়েছে ট্রাক্টর, বাণিজ্যিক ও তিন চাকার চাহিদাও। ফাডার প্রেসিডেন্ট মণীশ রাজ সিঙ্ঘানিয়া জানান, গত ডিসেম্বর বা গত বছরের হিসাবে সার্বিক বিক্রি কমার কারণ সেই দু’চাকার চাহিদায় ধাক্কা। গ্রামীণ অর্থনীতি এখনও পুরোপুরি ঘুরে না দাঁড়ানোর কারণেই এটা হচ্ছে।
আগামী কিছু দিন ব্যবসা কেমন থাকবে বলে আশা করছেন ডিলারেরা? ফাডা জানাচ্ছে, জানুয়ারির প্রথম ১৫ দিন এমনিতেই চাহিদা কম থাকে। তার উপর সম্প্রতি দাম বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে বিভিন্ন গাড়ি সংস্থা। এ ছাড়াও এপ্রিল থেকে বিএস-৬ মাপকাঠির দ্বিতীয় পর্যায়ের নিয়মকানুন চালু হলে ফের গাড়ির দাম বাড়ার আশঙ্কা। মূল্যবৃদ্ধির হারও চড়া। ফলে জানুয়ারি-মার্চের ব্যবসা নিয়ে চিন্তা বহাল। তাই তারা নির্মাতা সংস্থাগুলির কাছে বিশেষ প্রকল্প চালুর আর্জি জানিয়েছে। যাতে গাড়ি কিনতে উৎসাহ বোধ করেন ক্রেতারা।