প্রতীকী ছবি।
লকডাউন উঠলে ধীরে ধীরে ব্যবসা ফেরার আশায় ছিল গাড়ি শিল্প। কারণ, শো-রুমে ভিড় জমতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও ক্রেতাদের খোঁজ-খবর নেওয়ার ঝোঁক বেশ চোখে পড়ার মতো। এটা স্পষ্ট যে, করোনা সংক্রমণ এড়াতে ট্রামে-বাসে চড়ার বদলে অনেক মানুষ নিজের গাড়ি কেনার কথা ভাবছেন। এমনকি হয়তো যাঁরা আগে কখনও ভাবেননি তাঁরাও। কিন্তু সোমবার ডিলারদের সংগঠন ফাডা জুলাইয়ে খুচরো বিক্রি অর্থাৎ, শো-রুম থেকে বিক্রির পরিসংখ্যান প্রকাশ করার পরে ফের হতাশায় ডুবে গেল গাড়ি শিল্প মহল। তাদের দাবি, আগের মাসের থেকে কিছুটা বিক্রি হয়তো বেড়েছে। কিন্তু আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ছবিটা প্রায় একই রকম তলানিতে, ধাক্কা দেওয়ার মতো। ফাডারও দাবি, স্বাভাবিক ব্যবসায় ফেরার নামগন্ধ নেই। আগের বছরের জুলাইয়ের কাছাকাছিই পৌঁছনো যায়নি। এ রাজ্যেও সব ধরনের গাড়ির বিক্রি গত বছরের তুলনায় কমেছে।
আনলক পর্বে পা রাখার পরে বিশেষ করে সংক্রমণ এড়াতে নিজের গাড়িতে যাতায়াতের জন্য দু’চাকা বা ছোট কম দামি চার চাকার গাড়ির কেনার প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু গাড়ি সংস্থা ও ডিলার, সকলেরই দাবি, জুলাইয়ের বিক্রি অন্তত সেই প্রবণতার প্রতিফলন নয়। আগের বছরের থেকে অনেক কম। জুনের থেকে যেটুকু বেড়েছে, তা স্বাভাবিক চাহিদার তুলনায় এটাই নগণ্য যে লাভ হয়নি তেমন। তা-ও এই নতুন ক্রেতাদের অধিকাংশই লকডাউনের আগেই গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে গ্রামীণ এলাকায় ভাল বর্ষায় কৃষির উন্নতির আশায় ট্র্যাক্টর ও দু’চাকার গাড়ির চাহিদা বেড়েছে।
ফাডার প্রেসিডেন্ট আশিস হর্ষরাজ কালে বলেন, ‘‘গত বছর এমনিতেই বিক্রি কম হয়েছিল। কিন্তু তার সঙ্গে তুলনা করলেও স্বাভাবিক চাহিদার পুনরুজ্জীবন এখনও অনেক দূর।’’
বিপুল নগদ হাত থাকলেও, গাড়ি কেনায় ঋণ দিতে এখনও ব্যাঙ্ক ও এনবিএফসির সতর্ক পদক্ষেপ চাহিদা চাঙ্গা করার পথে অন্তরায় বলে অভিযোগ ফাডার। বিশেষ করে বাণিজ্যিক, দু’চাকা ও তিন চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে ঋণ সহজলভ্য নয়। আশিসের দাবি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণ বণ্টন ১০-১৫ শতাংশ কমেছে। ফলে অনেক ক্রেতা গাড়ি কেনার কথা ভাবলেও গোড়ার খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
ট্র্যাক্টর ছাড়া চলতি অর্থবর্ষে সব ধরনের গাড়ির বিক্রির হাল খারাপেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে ফাডা। চাহিদা বাড়াতে ফের কেন্দ্রের কাছে পুরনো গাড়ি বাতিলের আর্থিক সুবিধা-সহ সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে তারা। তবে ডিলারদের দাবি, উৎসবের মরসুম শুরু হওয়ায় (ওনাম, গণেশ চতুর্থী) কিছুটা বিক্রি বৃদ্ধির আশা রয়েছে। অন্তত এ বার যদি একটু বিক্রি বাড়ানোর পথ তৈরি হয়।