আয়করের নতুন কাঠামোয় এখন বিমার প্রিমিয়ামে করছাড় নেই। —প্রতীকী চিত্র।
স্বাধীনতার ১০০ বছরের মধ্যে দেশের সব মানুষকে বিমার আওতায় আনতে চায় মোদী সরকার। অথচ তথ্য বলছে, বাস্তবে ঘটছে উল্টোটা। ২০২২-২৩ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহের হার ছিল জিডিপি-র ৪%। গত অর্থবর্ষে নেমেছে ৩.৭ শতাংশে। এর মধ্যে জীবন বিমার ক্ষেত্রে তা ৩% থেকে কমে হয়েছে ২.৮%। সাধারণ বিমায় হার দু’বছর ধরে আটকে ১ শতাংশে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সব কিছুর বাড়তে থাকা খরচের মধ্যে দাঁড়িয়ে বিমার সুরক্ষায় থাকার প্রয়োজনীয়তা যখন বাড়ছে, তখন প্রিমিয়াম আদায় কমার অর্থ গ্রাহক কমছে। বিশেষত প্রিমিয়ামের অঙ্ক যেহেতু আগের থেকে বেড়েছে অনেকখানি। এই অবস্থায় আসন্ন বাজেটে বিমায় আয়কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়া ও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। প্রকল্প বিক্রিতে উৎসাহ দেওয়ার কথাও বলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমার সুরক্ষা জরুরি হলেও গ্রাহক কমার কারণ একাধিক। এক, আয়করের নতুন কাঠামোয় এখন বিমার প্রিমিয়ামে করছাড় নেই। দুই, পুরনো কাঠামোয় যে ছাড় মেলে, প্রিমিয়ামের তুলনায় তা বেশ কিছু ক্ষেত্রে কম। ফলে বিমা প্রকল্প কিনতে উৎসাহ পাচ্ছেন না বহু করদাতা। তিন, স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম এত বেড়েছে যে, সাধারণ মানুষের একাংশ তা মেটাতে পারছেন না। অনেকেই, বিশেষত প্রবীণদের বড় অংশ প্রকল্প ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। একই অবস্থা জীবন বিমা বা সাধারণ বিমার ক্ষেত্রেও। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, এই কারণেই প্রিমিয়ামে জিএসটি কমানোর দাবিও উঠছে। যাতে খরচ কমে।
এলআইসি-র বিপণন বিভাগের প্রাক্তন কর্তা অরূপ দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘আয়করের নতুন কাঠামোয় বিমায় ছাড় নেই। পুরনো নিয়মে কম বয়সিদের স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা আয়কর ছাড় মেলে। বাবা-মাকে পলিসিতে যোগ করলে ছাড় ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত। যে কারণে বাজেটে প্রিমিয়ামে করছাড় বাড়ানো এবং নতুন বিকল্পে সেই সুবিধা দেওয়া দরকার।’’
বিমা এজেন্টদের সর্বভারতীয় নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘প্রিমিয়াম বাড়ায় বহু গ্রাহক স্বাস্থ্য বিমার প্রকল্প নবীকরণ করছেন না। জীবন বিমায় পলিসি ‘সারেন্ডার’ বা ‘পেড-আপ’ করে রেখেছেন। আদতে এতে ওই সব গ্রাহকেরই ক্ষতি হচ্ছে। ব্যর্থ হচ্ছে বিমার উদ্দেশ্য।’’