—ফাইল চিত্র
রাজ্যে ৬৭৫ কিলোমিটার রাস্তা কেন্দ্র তৈরি করবে বলে সোমবার বাজেটে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু কী ভাবে এবং কোথায় কোথায় সেই রাস্তা হবে, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত নন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। আবার ভোটের আগে এই ঘোষণাকে চমক ছাড়া অন্য কোনও ভাবে দেখতেও নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, ভোটের আগে শুরু কেন্দ্র-রাজ্যের সড়ক-যুদ্ধও।
এর আগে রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যের সড়ক পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য জানিয়েছিল, ওই ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা ‘বৈপ্লবিক’। সোমবার কেন্দ্রীয় বাজেটে ৬৭৫ কিলোমিটার সড়ক প্রকল্পের কথা শুনে মমতা উত্তরবঙ্গ থেকে বলেন, ‘‘তোমরা আবার কী করবে? আমরা তো রাস্তা করে দিয়েছি!’’ রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের মতে, নতুন জাতীয় সড়ক তৈরি বা জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণই কেন্দ্রের বাজেটের মূল লক্ষ্য হয়ে থাকতে পারে। আবার গ্রামীণ রাস্তার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনাতেও জোর দিতে পারে কেন্দ্র। তবে বাজেট কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়।
শিলিগুড়ির ঘোষপুকুর থেকে ধূপগুড়ি পর্যন্ত একটি অংশের রাস্তার কাজ প্রায় শেষ। ময়নাগুড়িতে উড়ালপুলের কাজ জমি জটে আটকে ছিল দীর্ঘদিন। এই অংশের কাজের জন্য সড়ক কর্তৃপক্ষকে নতুন করে টেন্ডার করতে হবে বলে দাবি। ফালাকাটা থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত অংশের টেন্ডার হলেও কাজ শুরু হয়নি। সেখানেও নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে বলে দাবি। কেন্দ্রের বরাদ্দ ২৫ হাজার কোটি টাকা থেকেই এই কাজগুলি হবে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানাচ্ছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক চার লেনে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এ দিন বাজেটে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার এই রাস্তার কথা উল্লেখ করে নির্মলা বলেন, এই রাস্তা সারানো ও সম্প্রসারণের কাজ হবে।
মালদহের সুজাপুর-নওদা যদুপুর পর্যন্ত ৫ কিমি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ জমি জটে আটকে। মালদহ শহরের মধ্যে দিয়ে ইংরেজবাজারের সুস্থানি মোড় থেকে পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ি পর্যন্ত ৯ কিমি রাস্তা খানাখন্দে ভরা। এক সময়ে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকায় রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হলেও অর্থের অভাবে তা ঢিমে তালে চলছিল বলে দাবি। মুর্শিদাবাদে প্রায় ৩০ কিমি রাস্তা রয়েছে। তার মধ্যে এখনও প্রায় সাড়ে সাত কিমি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হয়নি। কোথাও জমি পেলেও কাজ শুরু হয়নি, কোথাও বা জমিজটে আটকে সম্প্রসারণ। ফলে জমি-প্রশ্নে কেন্দ্র-রাজ্যের সমন্বয় জরুরি বলে মনে করছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।