গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আম জনতার বাজেট, নাকি উচ্চবিত্ত ও শিল্পপতিদের— বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এই নিয়েই শাসক-বিরোধী চর্চা চলল দিনভর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি, ‘বাজেটের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছেন কৃষকরা’। কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল, আপের মতো বিরোধীরা কার্যত এক সুরে বলেছেন, দিশাহীন বাজেটে আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে ধনীদের পকেট। গরিবের জন্য কিছুই নেই।
মধ্যবিত্তের উপর বাজেটের সরাসরি যে প্রভাব পড়ে, সেটা আয়করে। অনেকেরই আশা ছিল, আয়করের ঊর্ধ্বসীমা বাড়বে বাজেটে। কিন্তু নির্মলা সীতারামনের ঘোষণায় তেমন কিছু নেই। তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। সেই দিকটি মাথায় রেখেই কৃষি সেস বসিয়ে কৃষকদের সমস্যা সুরাহার চেষ্টা হয়েছে। আর নির্মলার বাজেট ঘোষণার পরেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাজেটের কেন্দ্রে রয়েছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ ও কৃষকরা। কৃষকদের আয় বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে বাজেটে।’’ বাজেট পেশের সময় নির্মলা সীতারামনও বলেন, ‘‘কৃষক কল্যাণে সরকার দায়বদ্ধ।’’
কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, পুরো দিশাহীন বাজেট। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীর খোঁচা, ‘আম জনতার হাতে টাকা আসবে, এমন ভাবনা ভুলে যান। মোদী সরকার তাদের পুঁজিপতি বন্ধুদের হাতে ভারতের সম্পদ তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে’।
প্রায় একই সুর তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের গলায়। তাঁর টুইট, ‘ভারতের প্রথম পেপারলেস বাজেট ১০০ শতাংশ দিশাহীনও বটে। ভুয়ো বাজেটের মূল উপজীব্য ভারতকে বেচে দাও’। রেল, বিমান, বন্দর, বিমা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিক্রির চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি করে ডেরেক বলেন, ‘‘আমজনতা, কৃষক কারও কথা ভাবা হয়নি। ধনীরা আরও ধনী হবেন। মধ্যবিত্তের জন্য কিছুই নেই। গরিব আরও গরিব হবেন।’’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবালের কথায়, ‘মুষ্টিমেয় কিছু বড় সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বাজেট এটা। এই বাজেটের ফলে সাধারণ মানুষের সমস্যা আরও বাড়বে, বাড়বে মুদ্রাস্ফীতিও’।
অন্য দিকে বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তাঁর মতে, ‘করোনার জন্য সরকারের আয় কমলেও যে ভারসাম্যের বাজেট পেশ করা হয়েছে, তার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি’। বাজেটে কোভিড টিকার জন্য বিপুল বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা। তাকে স্বাগত জানিয়েছে অধিকাংশ ওষুধ প্রস্তুতাকারী সংস্থা। সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী যে ভাবে চিকিৎসা খাতে এবং বিশেষ করে কোভিড টিকার জন্য বরাদ্দ করেছেন, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। এর ফলে ভারত দ্রুত এই অতিমারি থেকে মুক্তির দিকে এগিয়ে যাবে।’’