স্বেচ্ছাবসরের আর্জি পেরোল ৬৩ হাজার

কম কর্মীতে কাজ কী ভাবে, শুরু ভাবনা

এখন বিএসএনএলের মোট কর্মী-আধিকারিকের সংখ্যা প্রায় ১.৬৫ লক্ষ। কর্তৃপক্ষের তালিকা অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে ভিআরএসের যোগ্য প্রায় ১.০৪ লক্ষ। স্বেচ্ছাবসর ব্যবস্থা চালুর পরে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৬৩,০০০ আর্জি জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৩
Share:

স্বেচ্ছাবসর ব্যবস্থা চালুর পরে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৬৩,০০০ আর্জি জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। ফাইল চিত্র

আশা ছিল, বিএসএনএলে স্বেচ্ছাবসর (ভিআরএস) নেবেন ৭০,০০০-৮০,০০০ কর্মী-আধিকারিক। কিন্তু মাত্র চার দিনেই আবেদন জমা পড়ল তার প্রায় ৭৫%। মনে করা হচ্ছে, এ ভাবে চললে আগামী দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থাটিতে কর্মী সংখ্যা কমবে অনেকটাই। যে কারণে এরই মধ্যে পরের ধাপ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে বিএসএনএল। সংস্থা সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে কী ভাবে কম কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে সংস্থা চালানো সম্ভব, তার আঁচ পেতে সব সার্কলগুলিকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠাতে বলেছে সদর দফতর। পাশাপাশি, ১২ নভেম্বরের পরে সব সার্কলের চিফ জেনারেল ম্যানেজারদের (সিজিএম) নিয়ে বৈঠকে বসবেন সংস্থাটির শীর্ষ কর্তারা।

Advertisement

এখন বিএসএনএলের মোট কর্মী-আধিকারিকের সংখ্যা প্রায় ১.৬৫ লক্ষ। কর্তৃপক্ষের তালিকা অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে ভিআরএসের যোগ্য প্রায় ১.০৪ লক্ষ। স্বেচ্ছাবসর ব্যবস্থা চালুর পরে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৬৩,০০০ আর্জি জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকের প্রশ্ন, সংস্থার লক্ষ্যের চেয়ে বেশি কর্মী-আধিকারিক স্বেচ্ছাবসরের আর্জি জানালে, বিএসএনএল কি তাঁদের সকলকেই তা দেবে? আর দিলে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁদের পাওনা মেটাবে কী ভাবে?

সংস্থাটির সিএমডি পি কে পুরওয়ার এ দিন ফোনে জানান, ভিআরএস ব্যবস্থা চালুর ১০ দিন পরে পুরো বিষয়টি ও পরে সংস্থা চালানোর পদ্ধতি খতিয়ে দেখতে সার্কলগুলির শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে তাঁদের বৈঠকে বসার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, ১২ তারিখের পরে সেই বৈঠক হতে পারে।

Advertisement

প্রস্তাব কত


• শনিবার বিএসএনএলে ভিআরএসের প্রস্তাব ছাড়িয়েছে ৬৩ হাজার।
• দেশের অনেক জায়গায় নেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ থাকায় কিছুটা ব্যাহত প্রস্তাব জমার প্রক্রিয়া।

সংশয় কোথায়?


• ভিআরএস পাওয়ার যোগ্য ১ লক্ষের বেশি কর্মী-আধিকারিকের প্রায়
সকলে স্বেচ্ছাবসর চাইলে, সবাইকেই তা দেওয়া হবে?
• সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁদের পাওনা মেটাতে পারবে সংস্থা?
• এত জনকে একসঙ্গে স্বেচ্ছাবসর দিলে, কম কর্মী
নিয়ে সংস্থা চলবে কী ভাবে?
কী কী কাজ বাইরের সংস্থাকে দিয়ে করানো হবে (আউটসোর্স)?


কর্তৃপক্ষের দাবি

• বেতন খাতে খরচ কমাতে সব দিক খতিয়ে দেখেই কর্মী সঙ্কোচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
• কম মানবসম্পদ নিয়েও সংস্থা পরিচালনা সম্ভব।

বিএসএনএল সূত্রের ইঙ্গিত

• ১২ নভেম্বরের পরে সব সার্কলের সিজিএমদের নিয়ে বৈঠক শীর্ষ কর্তাদের।
• কম কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে সংস্থা পরিচালনার বিকল্প কৌশলের প্রাথমিক রূপরেখা ১৮ নভেম্বরের মধ্যে সদর দফতরে পাঠাতে হবে সার্কলগুলিকে।
• ভবিষ্যতে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা আউটসোর্স করার সম্ভাবনা।

তবে এখনও পর্যন্ত সার্কলগুলিকে যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, তাতে ‘ভারতনেট’ (অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে দেশের গ্রাম পঞ্চায়েতে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া) প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য দাবি, স্বাভাবিক ভাবেই বৈঠকে ভিআরএস ও তার পরে সংস্থার কাজের পদ্ধতিই গুরুত্ব পাবে।

বৈঠকের কথা জানালেও, তার দিনক্ষণ সিএমডি অবশ্য এ দিন স্পষ্ট করেননি। তেমনই জানাতে চাননি কম কর্মী-আধিকারিকদের নিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার কৌশল। তবে এ রাজ্যে বিএসএনএলের অন্যতম এক শীর্ষ কর্তা জানান, ভিআরএস দেওয়ার পরে কী ভাবে সংস্থার কাজকর্ম চলবে, তার জন্য কমিটি তৈরি করে প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছে সদর দফতর। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তা জমা দিতে হবে। সূত্রের খবর, কর্মী-আধিকারিকেরা ভিআরএস নেওয়ার পরে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা আউটসোর্স করার সম্ভাবনা নিয়ে গত সপ্তাহে সার্কলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএসএনএলের ডিরেক্টর (সিএফএ)। ফেব্রুয়ারির মধ্যে সার্কলগুলিকে সেই রিপোর্ট দিতে হবে। আউটসোর্সের ক্ষেত্রে দিনে নতুন লাইনের সংযোগ দেওয়া, খারাপ লাইন মেরামতি ইত্যাদি কাজের মাপকাঠি বেঁধে দিয়ে চুক্তির ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে টাকা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement