—প্রতীকী চিত্র।
আরও উপরে পাড়ি দিতে শেয়ার বাজারকে নতুন জ্বালানি জোগালো আড়াই বছরে এই প্রথম ভারতের চলতি খাতে উদ্বৃত্ত হওয়ার খবর। মঙ্গলবার সেনসেক্স প্রথমন পেরোল ৭৮ হাজারের মাইলফলক। ৭১২.৪৪ পয়েন্ট উঠে থামল ৭৮,০৫৩.৫২-র নতুন শিখরে। লেনদেন চলাকালীনও তৈরি হয়েছে নজির। ৮২৩.৬৩ উঠে সূচক ছুঁয়ে এসেছে ৭৮,১৬৪.৪১ অঙ্কের সর্বকালীন উচ্চতা। রেকর্ড গড়েছে নিফ্টিও। থিতু হয়েছে ২৩,৭২১.৩০-এ। উত্থান ১৮৩.৪৫।
দেশের রফতানি মূল্য আমদানি মূল্যকে ছাড়ালে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়। তার সঙ্গে বিভিন্ন খাতে বিদেশি মুদ্রা আয়-ব্যয় ধরলে মেলে চলতি খাতের হিসাব। পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক বলেন, ‘‘আমদানি খরচের তুলনায় রফতানি খাতে আয় হয়েছে বেশি। রাজকোষে বাড়তি বিদেশি মুদ্রা ঢুকেছে। সরকার উদ্বৃত্ত আয় কাজে লাগালে তা বেকারত্বকে কমিয়ে জিডিপি বৃদ্ধির হারকে তুলবে। বাড়তে পারে টাকার দাম। তবে এতে মূল্যবৃদ্ধির মাথা তোলার আশঙ্কাও থাকছে।’’ সোমবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত জানুয়ারি-মার্চে চলতি খাতে দেশের ভাঁড়ারে এসেছে ৫৭০ কোটি ডলার। যা জিডিপি-র ০.৬%। ১০টি ত্রৈমাসিকে এই প্রথম তা উদ্বৃত্ত।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর দাবি, ‘‘আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি কমছে। তাই সুদ কমার পথ তৈরি হচ্ছে বলে আশায় বাজার। দেশেও সুদ কমানোর চাপ বাড়ছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটিরই একাংশ এ ক্ষেত্রে দেরি করার পক্ষপাতী নন। এ ছাড়া অনুমান, আরবিআইয়ের ২.১০ লক্ষ কোটি ডিভিডেন্ডের টাকা থেকে রাজকোষ ঘাটতি মিটিয়েও কেন্দ্র মূলধনী খরচ করতে পারবে। ভাল বর্ষার পূর্বাভাস রয়েছে। কিছু সংস্কারমুখী ঘোষণা থাকতে পারে বাজেটে। তা-ও বাজার চড়ার কারণ।’’ তবে তাঁর সতর্কবার্তা, বাজেটে কিছু ক্ষেত্রে ঋণ মকুব-সহ কয়েকটি জনমোহিনী পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে জল্পনা। সে ক্ষেত্রে তার তাৎক্ষণিক বিরূপ প্রভাবে সূচক হয়তো নামবে। ফলে সাধারণ লগ্নিকারীদের সাবধানে পা ফেলতে হবে।
বিশেষজ্ঞ কমল পারেখ অবশ্য সূচকের এমন দৌড় বাজারে বিপুল নগদ জোগানের কারণে বলেই মনে করছেন। বলছেন, ‘‘ফান্ড মারফত প্রচুর টাকা লগ্নি হচ্ছে। ফলে চাহিদা বাড়ছে শেয়ারের। তাই বাড়ছে দাম।’’ বিশেষজ্ঞ বিনয় আগরওয়ালের দাবি, ‘‘বাজেটের আগে পর্যন্ত পতনের আশঙ্কা নেই। বাজেট অনুযায়ী বাজারের পরবর্তী গতি নির্ধারিত হবে।’’ মঙ্গলবার ভারতের শেয়ার বাজারে ১১৭৫.৯১ কোটি টাকা ঢেলেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।