প্রতীকী ছবি।
উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপে বহু আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা ফের খোলার ইচ্ছে প্রকাশ করছেন কেউ। তেমনই এক সময়ে ভূস্বর্গ ছেড়ে আসা কেউ স্বপ্ন দেখছেন সেখানে ফের জমি কেনার। সাধারণত রাজনৈতিক বিষয়ে মুখ খুলতে অনীহা দেখানো দেশের শিল্প মহল এ দিন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত।
মহীন্দ্রা গোষ্ঠীর কর্ণধার আনন্দ মহীন্দ্রা থেকে জেএসডব্লিউ গোষ্ঠীর সজ্জন জিন্দল— ৩৭০ বিলোপের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রায় সকলেই। এক বাক্যে বলছেন, এই ঘোষণা আক্ষরিক অর্থেই ঐতিহাসিক। শিল্প মহলের আশা, এর দৌলতে বড় বিনিয়োগের রাস্তা খুলে যাবে জম্মু ও কাশ্মীরে। তার জন্য নেওয়া যাবে জমি। ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে দেওয়া বিশেষ মর্যাদার জেরে যা এত দিন করা যেত না। কানাঘুষো, এ বছরই (অক্টোবর নাগাদ) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে, জম্মু ও কাশ্মীরে বড় মাপের শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করতে পারে কেন্দ্র। চেষ্টা হতে পারে বড় অঙ্কের লগ্নি-ঘোষণারও।
সোমবার রাজ্যসভা এবং লোকসভায় এই বিল নিয়ে আলোচনার সময়ে সরকার বার বার বোঝাতে চেয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য জম্মু ও কাশ্মীরকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পুরোদস্তুর যুক্ত করা। সেখানে লগ্নির রাস্তা প্রশস্ত করা। ইঙ্গিত, এত বড় সিদ্ধান্তের পরে মূলত আর্থিক উন্নয়নের রাস্তায় হেঁটেই উপত্যকার মানুষের মন পাওয়ার চেষ্টা করবে তারা। এ দিন বিনিয়োগের সেই প্রতিশ্রুতির অন্তত ইঙ্গিত ফুটে উঠেছে শিল্প মহলের কথাতেও। অনেকে ডুব দিয়েছেন নস্ট্যালজিয়াতেও।
তবে অনেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ৩৭০ বিলোপ নিয়ে যে শিল্প মহল উচ্ছ্বসিত, তাদেরই কিন্তু মুখে কুলুপ অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে। চাহিদা তলানিতে। থমকে বৃদ্ধি। অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ার প্রায় সমস্ত লক্ষণ স্পষ্ট। কিন্তু সে প্রসঙ্গে বিচ্ছিন্ন ভাবে মুখ খুলেছেন হাতে গোনা শিল্পপতি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন, একই উৎসাহে তাঁরা এ বার অর্থনীতি নিয়েও ‘মনের কথা’ বলবেন কি?