ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা। ছবি:শাটারস্টক
বিশ্ব বাজারে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেমন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নতুন নতুন বাণিজ্যের প্রবেশ ঘটেছে, তেমনই বেড়েছে প্রতারণার ঘটনাও। রোজই নতুন নতুন পদ্ধতি বার করছে প্রতারকরা সাধারণ মানুষকে ঠকানোর জন্য। এ বার নতুন ভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, তাও আবার জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে।
হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কয়েকদিন ধরেই একটি মেসেজ সবার কাছে ঘুরছিল যে, হোয়াটসঅ্যাপের ১০ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেওয়া হচ্ছে এক হাজার জিবি ফ্রি ইন্টারনেট। এই ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়ার জন্য ওই মেসেজেই দেওয়া একটি লিঙ্কে ক্লিক করে উত্তর দিতে হবে কিছু প্রশ্নের। ফ্রি ইন্টারনেট পাওয়ার আশায় বহু মানুষ ইতিমধ্যে ওই লিঙ্কে ক্লিকও করেছেন, কিন্তু পাননি এক হাজার জিবি ফ্রি ইন্টারনেট।
ইএসইটি নামক একটি সাইবার নিরাপত্তা প্রদানকারী সংস্থার গবেষকরা এই মেসেজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। কারণ মেসেজটিতে দেওয়া ইউআরএল’টি হোয়াটসঅ্যাপের অফিশিয়াল ডোমেনের নয়। বিভিন্ন সময় কোনও ‘থার্ড পার্টি অ্যাপ’এর মাধ্যমে প্রোমোশন চালালেও চলতি নিয়ম হল যে কোম্পানির নামে ওই নির্দিষ্ট অফারটি চলছে, তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও এর উল্লেখ থাকতে হবে। এই ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের অফিশিয়াল সাইটে এরকম কোনও অফারের উল্লেখ নেই।
আরও পড়ুন: মোবাইল ব্যবসার দুনিয়ায় গত দু’বছরে কাজ গিয়েছে আড়াই লাখ মানুষের!
এই লিঙ্কে ক্লিক করলে কী হবে?
ফরোয়ার্ড হয়ে আসা মেসেজটিতে এক হাজার জিবি বিনামূল্যে পাওয়ার ফাঁদ পাতা হয়েছে বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে, যাতে মেসেজটি দেখে বিশ্বাসযোগ্য বলেই মনে হয়। এই লিঙ্কে ক্লিক করলেই তা আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য একটি পেজে, যেখানে ফ্রি ইন্টারনেট পাওয়ার জন্য আপনাকে একটি সমীক্ষায় অংশ নিতে বলা হয়। সেখানে হোয়াটসঅ্যাপ আপনার কেমন লাগছে থেকে এই লিঙ্ক কোথা থেকে পেলেন- এইধরনের প্রশ্ন করা হয়। এর পর বিনামূল্যে ইন্টারনেট পাওয়ার জন্য এই লিংকটি আরও ৩০ জনকে ফরোয়ার্ড করতে বলা হয়।
এই লিঙ্কটি আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করছে না, কিংবা কোনও রূপ অর্থও হাতাচ্ছে না সরাসরি আপনার থেকে। তবে এই লিঙ্কে ক্লিক করলে লাভ হবে প্রতারকদের কারণ তাদের বানানো ওই মিথ্যা লিঙ্কে যত বেশী ক্লিক হবে, ততই অর্থ ঢুকবে তাদের অ্যাকাউন্টে। এই ধরণের প্রতারকদের মূল লক্ষ্য থাকে বেশি সংখ্যায় মানুষের কাছে পৌছানোর। বিভিন্ন ভুয়ো অফার বা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই মেলে অর্থ।
এই ডোমেন সাইট থেকেই এর আগে নেসলে, আডিডাস বা রোলেক্স ঘড়ি বিনামূল্যে দেওয়ার দাবি করে ভুয়ো সাইট তৈরি করা হয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপের মতোই এই পণ্যগুলিকে বিনামূল্যে পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হবে বলে দাবি করা হয়েছিল। গবেষকরা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের এই ধরনের যে কোনও ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: এই চায়ের কেজি ৫০ হাজার টাকা!