প্রতীকী ছবি।
সরকারি সম্পত্তি কর্পোরেট সংস্থাকে ব্যবহার করতে দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের (ন্যাশনাল মনিটাইজ়েশন পাইপলাইন) বিরোধিতায় নামল রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল এবং ব্যাঙ্কের কর্মী ইউনিয়নগুলি। তালিকায় আছে ২.৮৬ লক্ষ কিমির ভারত অপটিক ফাইবার এবং বিএসএনএল-এমটিএনএলের ১৪,৯১৭টি মোবাইল টাওয়ার-ও। এর বিরুদ্ধে শুক্রবার দেশ জুড়ে বিএসএনএলের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় সংস্থার এমপ্লয়িজ় ইউনিয়ন। ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন আইবকের অভিযোগ, এটা আসলে সরকারি সব কিছু বেসরকারিকরণেরই একটি ধাপ। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না-করলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
সড়ক, রেল, বিদ্যুৎ, বিমানবন্দর, গ্যাস সরবরাহ, টেলিকম-সহ নানা ক্ষেত্রের অব্যবহৃত এবং কম ব্যবহৃত সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করতে দিয়ে চার বছরে ৬ লক্ষ কোটি টাকা তুলতে চায় মোদী সরকার। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমের মতো বিরোধী দল, এমনকি আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এ দিন বিএসএনএলের কর্মী সংগঠনের তোপ, এ ভাবে আমজনতার করের টাকায় তৈরি দ্রুত গতির নেট এবং মোবাইল পরিষেবার পরিকাঠামো কর্পোরেটের হাতে তুলে দিচ্ছে কেন্দ্র। পরে হয়তো বিএসএনএলের ৭ লক্ষ কিমি অপটিক ফাইবারও দেবে। কর্পোরেটকে সম্পত্তি ব্যবহার করতে দেওয়ার কথা বলে বিএসএনএল-এমটিএনএলের বেসরকারিকরণের পরিকল্পনাও শুরু করে দেওয়া হল কি না, সেই প্রশ্নও তুলছে তারা। বৃহস্পতিবারই সংগঠনটি বিবৃতিতে বলেছিল, ‘‘মোবাইল টাওয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বিএসএনএলকে বেসরকারি হাতে দেওয়ার পরিকল্পনার সূচনা মাত্র। মোদী সরকার ১ বছর ৮ মাস ধরে সংস্থার ৪জি পরিষেবা চালুর রাস্তায় কেন বাধা তৈরি করছে, তা স্পষ্ট।’’
নির্মলার যুক্তি, সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করছেন না তাঁরা। শুধু ব্যবহার করতে দিয়ে আয় বাড়াচ্ছেন। কেন্দ্রের হাতেই মালিকানা থাকবে। তবে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের হাতে জাতীয় সম্পদ তুলে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। আয় বাড়ানো জরুরিই হলেও সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি সংস্থার হাতে যাবে কেন— প্রশ্ন আইবকের। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘এটা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও তার সম্পদ পাইকারি হারে বেসরকারিকরণ করার প্রথম পদক্ষেপ। পরিকল্পনা ফেরাতে হবে। না-হলে ব্যাঙ্ক কর্মী এবং অফিসারেরা দেশ জুড়ে আন্দোলনে নামবেন।’’