—প্রতীকী চিত্র।
পেঁয়াজ রফতানি নিয়ে গুজব ঠেকাতে কোমর বেঁধে নামল কেন্দ্র।
ঠিক আড়াই মাস আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজের রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল মোদী সরকার। মঙ্গলবার তারা ফের স্পষ্ট জানিয়ে দিল, সেই সময় এগিয়ে আনার কোনও প্রশ্ন নেই। সূত্রের খবর, বরং নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে। কারণ, সরকারের প্রধান লক্ষ্য দেশের বাজারে পেঁয়াজের জোগান বাড়িয়ে তার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, শুধু পেঁয়াজ নয়, লোকসভা নির্বাচনের আগে একাধিক অত্যাবশ্যক খাদ্যপণ্যের দামই নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে চলেছে মোদী সরকার। ভোটের আগে যে বিষয়গুলি তাদের কিছুটা অস্বস্তিতে রেখেছে তার মধ্যে খাবারদাবারের আকাশছোঁয়া দাম অন্যতম।
পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে সম্প্রতি রটনা ছড়িয়েছিল। তার জেরে মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ে দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজের পাইকারি বাজারে মাত্র দু’দিনের মধ্যে পণ্যটির দাম ৪০.৬২% বেড়ে যায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি কুইন্টাল প্রতি পেঁয়াজের দাম ছিল ১২৮০ টাকা। ১৯ ফেব্রুয়ারি তা ১৮০০ টাকায় পৌঁছে যায়। এ দিন কলকাতার কোলে মার্কেটে পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা। খুচরো বাজারে ৩০ টাকার আশপাশে। কোলে মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, নাশিক থেকে পেঁয়াজ রফতানি শুরু হলে ভবিষ্যতে পাইকারি এবং খুচরো দাম বাড়তে পারে। এই ধরনের গুজব যাতে আর ডালপালা মেলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে তাই কোমর বেঁধে নামতে হয় সরকারকে। কেন্দ্রীয় ক্রেতাসুরক্ষা সচিব রোহিত কুমার সিংহ বলেন, ‘‘পেঁয়াজের রফতানির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়নি। তা বহাল আছে এবং সেই ব্যবস্থায় কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’
গত প্রায় দেড় বছর খাদ্যপণ্য, বিশেষ করে আনাজপাতির মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কায় সাধারণ মানুষ নাকাল। জানুয়ারিতে দেশের খুচরো বাজারে সামগ্রিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধির হার ৫.১ শতাংশে নামলেও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার সেই ৮.৩ শতাংশে চড়ে। পাইকারি বাজারের অবস্থাও একই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটবাজারে বেশ কিছু শর্ত অনুকূলে থাকলেও দামের দৌড়ে মোদী সরকার যথেষ্ট অস্বস্তিতে। সে কারণে পেঁয়াজের পাশাপাশি বাসমতি বাদে অন্যান্য সাদা চালের রফতানিতে কড়াকড়ি করেছে সরকার। টোম্যাটো বিক্রি করছে সরকারি বিপণি থেকে। খোলা বাজারে ছাড়ার জন্য সরকারি গুদামে বাড়াচ্ছে শস্যের মজুতও।