এক মাস আটকে টাকা, বাকি পড়েছে স্কুল ফি

৪,৩৫৫ কোটির ওই কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরে টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা বাঁধে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এখন তা ছ’মাসে ৪০ হাজার। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, তহবিল তুলতে না পেরে মৃত্যু হয়েছে একাধিক আমানতকারীর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি ও মুম্বই শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৯
Share:

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।

প্রায় এক মাস হল আর্থিক কেলেঙ্কারিতে চোট খাওয়া পঞ্জাব অ্যান্ড মহারাষ্ট্র কোঅপরেটিভ (পিএমসি) ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলায় বিধিনিষেধ বসিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। গ্রাহকদের অভিযোগ, তার পর থেকে তাঁদের দুর্দশা শুধুই বেড়েছে। কেউ ছেলেমেয়ের স্কুলের ফি দিতে পারছেন না। কারও আটকে গিয়েছে চিকিৎসা। টাকা তুলতে না পেরে কারও আবার সংসারের খরচ চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। ওই ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট বা ফিক্সড ডিপোজিট আছে যাঁদের, তাঁদের অনেকেরই আশঙ্কা সারা জীবন ধরে জমানো টাকা হয়তো হারাতে হবে।

Advertisement

৪,৩৫৫ কোটির ওই কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরে টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা বাঁধে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এখন তা ছ’মাসে ৪০ হাজার। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, তহবিল তুলতে না পেরে মৃত্যু হয়েছে একাধিক আমানতকারীর। ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের প্রশ্ন, অডিটে এত বড় আর্থিক নয়ছয় ধরতে পারল না কেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক? প্রতিবাদে আরবিআই ঘেরাও করে নাগাড়ে ক্ষোভ উগরে তাঁরা বলেছেন, নিজেদের দোষে প্রতারণা আটকাতে না পারার পরে নিয়ন্ত্রক এখন গ্রাহকের রোজগারের টাকা আটকে দিয়ে বিপাকে ফেলছে তাঁদের। অবিলম্বে আমানত ফেরত দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

যেমন, ৪০ বছরের রবীন্দ্র কুমার ঝা। দুই সন্তানের স্কুলের মাইনে দিতে পারছেন না। সংসার খরচ চালাতেও হিমশিম। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি এক দুর্ঘটনার পরে পুরো সুস্থ হননি। যবে থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে, রক্তচাপ কমছে না। অবসাদে ভুগছেন। এম এ চৌধুরীর মতো ব্যবসায়ীর বক্তব্য, কর্মীদের বেতন ও কর দেওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুতের বিলও বাকি। কারণ পিএমসি ব্যাঙ্কের চেক জমা দিলেও তা ফিরে এসেছে।

Advertisement

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী টেক চাঁদের (৭১) আক্ষেপ, ব্যাঙ্কে ১৮ লক্ষ টাকার বেশি, অথচ স্ত্রীর ডায়ালিসিস হচ্ছে না। কারণ, এ জন্য মাসে প্রয়োজনীয় ১০ হাজার টাকা সুদ থেকে আসে। টেক চাঁদের মতো উদাহরণ অজস্র। সুদ নির্ভর আর এক গ্রাহক অনুরাধা সেনের অভিযোগ, তাঁদের কষ্টের অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা করছে না কেন সরকার! তাঁর বার্তা, ‘‘আমরা যাতে সমস্যায় না পড়ি, সে জন্যই এই সরকারকে সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোটে ক্ষমতায় এনেছি। এ রকম চললে পরের নির্বাচনে এদের ভোট দেব না।’’ গুরজ্যোত সিংহ ওই ব্যাঙ্কে টাকা রাখছেন আট বছর বয়স থেকে। ২৫ বছরের সিংহের জীবনে এখন একটাই লক্ষ্য, ৩ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement