প্রতীকী ছবি
ফের চাহিদার অভাব নিয়ে হা-হুতাশ শিল্পের। আর অবস্থা বদলানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আশ্বাস মন্ত্রীদের। দেওয়ালে পিঠ ঠেকা গাড়ি শিল্পের সঙ্গে সরকারি প্রতিনিধিদের বৈঠকে প্রাপ্তি বলতে এটুকুই। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, চাহিদা ঠেলে তুলতে কেন্দ্রের আশ্বাস হোক বা আসন্ন উৎসবের মরসুমে বিক্রি বাড়ার আশা, আপাতত ভরসা ওটাই। যে ভরসায় অপেক্ষা করতে গিয়ে পেরিয়েছে প্রায় দেড় বছর।
ব্যবসার যা হাল, তাতে নতুন দূষণ বিধি মেনে গাড়ি তৈরিতে লগ্নির ক্ষমতা তাদের নেই— এ কথা জানিয়ে শুক্রবার গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম চাহিদা বাড়াতে ফের কেন্দ্রের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছে। যার মধ্যে একটি জিএসটির হার ছাঁটাই। ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর কথার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতিও শীঘ্র আসবে। একাংশের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন আশ্বাসেই তো আটকে রয়েছে ওই দু’টি বিষয়!
এ দিন সিয়ামের বার্ষিক সভায় জাভড়েকর ছাড়াও ছিলেন সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। সিয়ামের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরা ও নতুন প্রেসিডেন্ট কেনিচি আয়ুকায়া ব্যবসার মলিন ছবি তুলে ধরেন। রাজনের বক্তব্য, দেড়-দু’বছর ধরেই মন্দার কবলে গাড়ি শিল্প। কেনিচির মতে, ইতিহাসে সব থেকে কঠিন সময় চলছে। যা কাটাতে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি নীতির দাবি তোলেন টয়োটা কির্লোস্করের কর্তা বিক্রম কির্লোস্কর।
শিল্পের বার্তা
• সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ২০২২ সাল থেকে নতুন নিয়ম মেনে গাড়ি তৈরির জন্য প্রচুর লগ্নি দরকার। কিন্তু চাহিদার অভাবে সংস্থাগুলির আয় যে ভাবে তলিয়েছে, তাতে সেই লগ্নির ক্ষমতা নেই।
• বহু দিন ধরেই দেশের গাড়ি বাজারে মন্দা। করোনা তা তীব্র করেছে। আসন্ন উৎসবের মরসুমে চাহিদা বাড়াতে জিএসটি হ্রাস, পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতি-সহ কেন্দ্রের নির্দিষ্ট আর্থিক সাহায্য জরুরি।
• যাত্রী ও বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রিতে এমন দীর্ঘ ও ভয়ানক ঝিমুনি ১৫-২০ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি। দু’চাকাও টানা ১৮ মাস ধরে মন্দার কবলে।
মন্ত্রীদের দাবি
প্রকাশ জাভড়েকর
• গাড়িতে কর কমানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।
• খুব শীঘ্রই পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতি আসবে।
• বিশেষ রফতানি নীতিও আনবে সরকার।
নিতিন গডকড়ী
• তেল আমদানির খরচ কমাতে বিকল্প জ্বালানিতে জোর দিতে হবে। গাড়িও হতে হবে সেই অনুযায়ী।
• বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির মাপকাঠি ঠিক করে দেওয়া হবে শীঘ্রই।
পীযূষ গয়াল
• (বহুজাতিক) সংস্থাগুলি মূল সংস্থাকে রয়্যালটি দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখুক।
• রফতানির জন্য ঋণে গ্যারান্টি প্রকল্পের কথা ভাবা হতে পারে।
তবে পুরনো গাড়ি বাতিলের কথা নিয়ে আশাবাদী নয় শিল্প। তাদের একাংশ বলছে, সিয়ামের বৈঠকেই এর আগে নিতিন বলেছিলেন, দু’বছর ধরে ওই নীতি না-হওয়ায় তিনি ক্লান্ত! কাজেই এ বারও সন্দেহ থাকছে।
এ দিন চাহিদার পাশাপাশি গাড়ি ও তার যন্ত্রাংশের জোগানের সমস্যার কথা তুলেছেন সিআইআই প্রেসিডেন্ট উদয় কোটাক। মহীন্দ্রার কর্ণধার পবন গোয়েন্কার দাবি, অবাধ বাণিজ্য চুক্তি ভারতের পক্ষে অনুকূল না-হওয়ায় মার খাচ্ছে সংস্থাগুলি।