ছবি সংগৃহীত।
কম করেও তিন থেকে চার বছর। তার আগে বসে যাওয়া গাড়ি শিল্পের চাকা ঘোরার আশা দেখছেন না গাড়ি সংস্থার কর্তারা। এমনকি তাঁদের দাবি, যদি স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয় এবং সরকার আর্থিক প্যাকেজ দেয়, তবেই সেটা সম্ভব। করোনা সংক্রমণের জেরে দেশ জোড়া লকডাউনের পরে জুনেই প্রথম পুরো মাস গাড়ি বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার সেই খতিয়ান দেওয়ার সময় ওই আশঙ্কার কথা জানান গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরাও। পাশাপাশি যে বৈদ্যুতিক গাড়ি আনা নিয়ে কেন্দ্র একসময় তাড়া দিচ্ছিল এবং সংস্থাগুলিও ঝাঁপাতে শুরু করেছিল, ওয়াধেরা সংশয়ী সেই পরিকল্পনার অগ্রগতি নিয়েও।
জুনে পাইকারি বিক্রির (সংস্থা যখন ডিলারদের বিক্রি করে) হিসেব বলছে, বৃদ্ধি দূর, আগের জুনের থেকে তা অনেক নীচে। যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি কম ৫০%। সিয়ামের মতে, বছর দেড়েক ধরে অর্থনীতির ঝিমুনি, বিএস-৬ গাড়ি তৈরির বিপুল খরচ ও শেষে করোনার হানা— পর পর ধাক্কায় কুপোকাৎ ব্যবসা।
যে বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি থেকে অর্থনীতির ছন্দে ফেরার আভাস মেলে, এপ্রিল-জুনের হিসেবে তার অবস্থাও শোচনীয়। যদিও এপ্রিল-মে মাসে সব কারবার বন্ধ ছিল। তবে সিয়াম কর্তারা বলছেন, বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি যে রকম ধুঁকছে, তাতে এটা স্পষ্ট খুব তাড়াতাড়ি অর্থনীতির আঁধার কাটার সম্ভাবনা নেই। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বাড়লে, তবে পণ্য পরিবহণের জন্য চাহিদা বাড়বে তার। অবস্থা বেগতিক দেখে বাণিজ্যিক গাড়ির মাসিক বিক্রির হিসেব প্রকাশই বন্ধ রেখেছে সংস্থাগুলি।
তবে ওয়াধেরা মানছেন, তুলনায় গাড়ির খুচরো ব্যবসার ছবিটা কিছুটা ভাল। একমত হুন্ডাইও। ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে গণপরিবহণ বা অ্যাপ-ট্যাক্সির বদলে অনেকেই গাড়ি কিনতে চাইছেন। মূলত ছোট গাড়ি ও দু’চাকা। গ্রামেও বিক্রি বাড়ার আশা। কিন্তু শিল্পের একাংশের দাবি, সেই চাহিদার অধিকাংশই নতুন নয়। তাই খুচরো বিক্রির ধারাবাহিকতা বজায় থাকা নিয়ে সন্দিহান তারা। আশঙ্কা উস্কে উপদেষ্টা সংস্থা ইক্রার পূর্বাভাস এই অর্থবর্ষে যাত্রী গাড়ির বিক্রি ২২-২৫% কমবে।
চাহিদার অভাবে গাড়ি কারখানার উৎপাদন ক্ষমতার ৬০-৭০ শতাংশের বেশি ব্যবহারের সম্ভাবনা দেখছেন না ওয়াধেরারা। ফলে অদূর ভবিষ্যতে সংস্থাগুলির নতুন লগ্নির আশাও নেই। আয় যখন তলানিতে, তখন ধার করে বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো পরিকল্পনায় টাকা ঢালার সামর্থ্য নেই শিল্পের। ওয়াধেরার বার্তা, আত্মনির্ভর করা দরকার গাড়ি শিল্পকেও। জরুরি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।