বণিকসভাটির দাবি, অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনে, কাঁচামালে ১৮-২০ শতাংশ খরচ হয় সংস্থাগুলির। সেগুলিতে কর বেশি চাপায় উৎপাদনে আরও বেশি টাকা লাগছে। প্রতীকী ছবি।
বহু দিন ধরেই ভারতকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলছে মোদী সরকার। তবে সেই লক্ষ্য পূরণের পথে করের হার যে অন্যতম বাধা, তা ফের ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিল শিল্প। আসন্ন বাজেটে চোখ রেখে বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম তাদের দাবি-সনদে জানাল, অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনে বিশ্ব বাজারে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে দেশ। যার অন্যতম কারণ কাঁচামালে চড়া কর এবং আমদানি শুল্ক। অথচ বক্সাইট ও কয়লার উপর মতো খনিজের ভান্ডারের নিরিখে বিশ্বে ভারত পঞ্চম বৃহত্তম। অপ্রচলিত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ঋণে চড়া সুদ নিয়েও আপত্তি তুলেছে তারা। এই মুহূর্তে দূষণ কমাতে এবং তেলের আমদানি খরচ বাঁচাতে যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অন্যতম বাজি।
আগামী ফেব্রুয়ারি বাজেট। শুরু হয়েছে তোড়জোড়। বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। চাহিদার কথা জানাচ্ছে শিল্পমহলও। সেই সূত্রেই অ্যালুমিনিয়াম ও বিকল্প বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের দাবি পেশ করেছে অ্যাসোচ্যাম। তার মধ্যেই আছে কাঁচামালে আমদানি শুল্ক-সহ কর কমানো, জিএসটি-র আওতায় কর কাঠামো মেরামত করা, কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
বণিকসভাটির দাবি, অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনে এমনিতেই কাঁচামালে ১৮-২০ শতাংশ খরচ হয় সংস্থাগুলির। এখন সেগুলিতে কর বেশি চাপায় উৎপাদনে আরও বেশি টাকা লাগছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে পণ্যের দাম। যা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দিচ্ছে দেশীয় অ্যালুমিনিয়াম শিল্পকে। রফতানির বদলে উল্টে অ্যালুমিনিয়ামের পণ্য আমদানি হচ্ছে বেশি। তাই করে সুরাহার দাবি করেছে তারা। বলেছে, অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রে ক্যালসিনেড পেট্রোলিয়াম কোক, কস্টিক সোডা লাই, প্রি-বেক্ড কার্বন অ্যানোড-সহ বিভিন্ন কাঁচামালে আমদানি শুল্ক-সহ করের হার কমানো হোক। এ জন্য জিএসটি-র ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচার (শেষে তৈরি পণ্যের তুলনায় যেখানে কাঁচামালে কর বেশি) ঠিক করার পরামর্শও দিয়েছে তারা।
অপ্রচলিত বিদ্যুৎ নিয়ে অ্যাসোচ্যামের প্রেসিডেন্ট সুমন্ত সিন্হার অভিযোগ, পশ্চিমী দুনিয়ায় যেখানে এ ক্ষেত্রে ঋণে সুদের হার মাত্র ৩-৪ শতাংশ, সেখানে ভারতে ৮-১০ শতাংশ। প্রতি ১ শতাংশ বিন্দু সুদ বাড়লে বিদ্যুতের মাসুল বাড়ে ১৫ পয়সা। ফলে সংস্থার পাশাপাশি অসুবিধায় পড়ছেন গ্রাহকও। তাই সুদ কমানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।