ফাইল চিত্র।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে সারা দেশে। যার জের পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন আর্থিক কর্মকাণ্ডে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিষেধকই দেশের অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে পারে বলে মনে করেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সদস্য অসীমা গয়াল। মঙ্গলবার প্রতিষেধক উৎপাদনে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গয়ালের মতে, ভারতের আরও বেশি প্রতিষেধক উৎপাদনের ক্ষমতা আছে। তা দেশের বড় অংশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে তাঁরা খরচে আরও স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন, ফলে বাড়বে চাহিদা। এর সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো এবং বাজারে নগদের জোগান বৃদ্ধি ভারতের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যে মোদী সরকারের ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্যপূরণ সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলার পরেও অতিমারির প্রকোপ না-কমায় চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
সোমবারই শীর্ষ ব্যাঙ্কের এক নিবন্ধে এপ্রিল ও মে মাসে অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে দাবি করা হয়েছে, আগের বছরের মতো আর্থিক কর্মকাণ্ড বিপর্যস্ত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বরং স্থানীয় লকডাউন, বাড়ি থেকে কাজ করা, পণ্য বাড়িতে সরবরাহ-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো আগের তুলনায় পোক্ত হওয়ায় অর্থনীতির উপরে আঘাত এসেছে কম। অসীমারও মতে, বিশেষত জায়গা বুঝে আংশিক লকডাউন জোগান শৃঙ্খলে আগের বারের মতো প্রভাব পড়তে দেয়নি। বাণিজ্যিক কাজ বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। ফলে অর্থনীতিকে ব্যাহত না-করেও করোনার প্রকোপ কমিয়ে আনা গিয়েছে। অর্থনীতিতে যেটুকু প্রভাব পড়েছে, তা-ও চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের পরে থাকবে না।
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই স্থানীয় লকডাউনের প্রভাব নিয়ে সতর্ক করেছেন। এমনকি বিভিন্ন রেটিং ও উপদেষ্টা সংস্থাও এর জন্য অর্থনীতি ধাক্কা খাবে জানিয়ে ক্রমাগত ২০২১-২২ সালের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করে চলেছে। অনেকে বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের নীচে থাকবে বলে মনে করছে। অসীমার মতে, এটা ঠিক যে অন্যান্য দেশে করোনার প্রথম ধাক্কার পরে অর্থনীতি যে হারে ঘুরে দাঁড়ানোর ঘটনা দেখা গিয়েছে, ভারতের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তবে এখন বৃদ্ধির হার কম থাকলেও, তা বরং অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই সাহায্য করবে। যে কারণে রেটিং সংস্থাগুলির উচিত ভারতের দীর্ঘ মেয়াদি সম্ভাবনা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।