Poverty

সার্বিক দারিদ্র কমলেও সব কিছুতে তত উজ্জ্বল নয় রাজ্য

‘ন্যাশনাল মাল্টিডায়মেনশনাল পভার্টি ইন্ডেক্স: এ প্রগ্রেস রিভিউ ২০২৩’ শীর্ষক এই রিপোর্ট অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দারিদ্র কমানোর দিক থেকে সব চেয়ে বেশি উন্নতি করেছে পুরুলিয়া।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৫:০৪
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অতিমারি পরবর্তী অর্থনীতিতে বৈষম্য, দারিদ্র বৃদ্ধির কথা জানাচ্ছে বিভিন্ন রিপোর্ট। রাষ্ট্রপুঞ্জ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে জীবনযাত্রা মানোন্নয়নের যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল, তা পূরণ করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিশ্বে ক্ষুধা সূচকেও বহু পিছনে ভারত। অথচ এর মধ্যেই সোমবার নীতি আয়োগের রিপোর্ট জানাল, ভারতে ২০১৫-১৬ সাল থেকে ২০১৯-২১ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ১৩.৫ কোটি মানুষ দারিদ্রের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসেছেন। পশ্চিমবঙ্গেও দারিদ্র কমেছে ৯.৪১ শতাংশ বিন্দু। তা দাঁড়িয়েছে ১১.৮৯ শতাংশে। তবে এখনও রাজ্যে অধিকাংশ মানুষ রান্নার গ্যাসের বদলে কাঠ-কয়লা ব্যবহার করেন। প্রায় এক তৃতীয়াংশ অপুষ্টির শিকার। ১০০টির মধ্যে নিজস্ব শৌচাগার ও পাকা বাড়ি নেই যথাক্রমে ৩২টি এবং ৪৭টিতে।

Advertisement

অপুষ্টি, শিশু-কিশোর মৃত্যু, মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, স্কুলে হাজিরা, জ্বালানি, পানীয় জল, নিকাশি, বাড়ি, বিদ্যুৎ, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে অ্যাকাউন্ট, অস্থাবর সম্পত্তি--- এই এক ডজন মাপকাঠির বিচার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচক তৈরি করে নীতি আয়োগ। এই সমস্ত মাপকাঠির দিক থেকে কত মানুষ বঞ্চিত, তা বিচার করেই দরিদ্রের হার ঠিক করা হয়।

‘ন্যাশনাল মাল্টিডায়মেনশনাল পভার্টি ইন্ডেক্স: এ প্রগ্রেস রিভিউ ২০২৩’ শীর্ষক এই রিপোর্ট অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দারিদ্র কমানোর দিক থেকে সব চেয়ে বেশি উন্নতি করেছে পুরুলিয়া। তবে এখনও জেলাটিতে সেই হার রাজ্যের মধ্যে সব চেয়ে বেশি (২৬.৮৪%)। তার পরে গরিব মানুষের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি উত্তর দিনাজপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরে। দারিদ্রের হার সব থেকে কম বর্ধমান, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দার্জিলিং এবং হাওড়ায়।

Advertisement

দেশে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কম দামে বাড়ি তৈরি, সকলের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা বা উজ্জ্বলা যোজনার (রিপোর্ট বলছে ১৪.৬ শতাংশ বিন্দু উন্নতি হয়েছে এই ক্ষেত্রে) মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারে কাঠ-কয়লার বদলে রান্নার গ্যাস পৌঁছনোর প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মোদী সরকার। তবে বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, সংযোগ মিললেও রান্নার গ্যাসের চড়া দামের জন্য সিলিন্ডার কিনতে পারেন না প্রকল্পে আসা বেশিরভাগ মানুষ। ফলে তাঁরা ফিরে যান কাঠ-কয়লায়। অত্যাবশ্যক পণ্যের মাত্রাছাড়া দামে খামতি থাকে পুষ্টি-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও।

পরিসংখ্যানও বলছে অনুযায়ী, শিশু-কিশোর মৃত্যুর হার কমানো, স্কুলে হাজিরা, বিদ্যুৎ সংযোগ, ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে অ্যাকাউন্ট, মায়েদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার মাপকাঠিতে পশ্চিমবঙ্গ অনেকখানিই এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু অপুষ্টি, রান্নার গ্যাস ব্যবহার না করা, পাকা বাড়ি ও শৌচাগারের অভাবের মতো সমস্যা রাজ্যকে পিছিয়ে রেখেছে। তবে সামগ্রিক ভাবে দেখতে গেলে সারা দেশে ১২টি মাপকাঠিতে করা এই সমীক্ষায় উন্নতি হয়েছে সবক’টিতেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement