—প্রতীকী চিত্র।
গত বছরের পরে চলতি অর্থবর্ষেও (২০২৪-২৫) যে ভারত দ্রুততম বৃদ্ধির বৃহৎ অর্থনীতির তকমা পেতে চলেছে, সে ব্যাপারে সমস্ত মূল্যায়ন এবং পরামর্শদাতা সংস্থা মোটামুটি একমত। অধিকাংশেরই পূর্বাভাস, এ বছর বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬.৫ শতাংশের আশপাশে। তা মেনে নিলেও, সম্প্রতি অর্থনীতিবিদদের মধ্যে এক সমীক্ষা চালিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স দাবি করেছে, সাধারণ নির্বাচনের পরে সরকারকে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে তা হল বেকারত্ব। এই অর্থনীতিবিদদের বড় অংশ বলেছেন, ভারতে প্রত্যেক বছর যত মানুষ কাজের বাজারে পা রাখেন তাঁদের জন্য যথেষ্ট কাজ অনেক বছর ধরেই তৈরি হচ্ছে না। কেউ কেউ আবার গত এক দশককে কর্মহীন বৃদ্ধির দশক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
১৬-২৩ এপ্রিল ২৬ জন অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট তৈরি করেছে রয়টার্স। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনই কেন্দ্রের সামনে বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হিসেবে বেকারত্বকে চিহ্নিত করেছেন। আট জন বলেছেন গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, দু’জন মূল্যবৃদ্ধি এবং এক জন দারিদ্রের কথা।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বছরে দু’কোটি নতুন কাজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মোদী সরকার। কিন্তু তার কতটা আদৌ করা গিয়েছে, সে ব্যাপারে কোনও দাবি কেন্দ্রের প্রথম সারির মন্ত্রীদের মুখেও শোনা যায় না। উল্টে বেকারত্ব এবং চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে হাতিয়ার করেই ভোটে প্রচারে কেন্দ্রকে বেঁধার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। অধিকাংশ জনমত সমীক্ষা এনডিএ-কে এগিয়ে রাখলেও এই দু’টি বিষয় কেন্দ্রকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। শ্রম মন্ত্রকের রিপোর্টেই ইঙ্গিত, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের বেকারত্বের (৩.৪%) তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে (৩.২%) উন্নতি সামান্য। বেসরকারি সংস্থাগুলির সমীক্ষায় অবশ্য দাবি, বেকারত্ব অনেক বেশি। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র রিপোর্ট বলছে, মার্চে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৬%।
সোসিতে জেনারালের ভারতীয় শাখার অর্থনীতিবিদ কুণাল কুণ্ডু বলেন, ‘‘গত এক দশক দেশ কার্যত কর্মহীন বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। তাতে কর্মীদের মধ্যে বেড়েছে হতাশা। তার জেরে জনসংখ্যার নিরিখে কর্মী বাহিনীর অনুপাত কমেছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার পরিকাঠামো, উৎপাদন ও সরকারি চাকরিকে কর্মসংস্থান তৈরির যন্ত্র হিসেবে কাজে লাগাতে চাইলেও এখনও পর্যন্ত তা সফল হয়নি।