—প্রতীকী চিত্র।
খুচরো বাজারে গত মাসের মূল্যবৃদ্ধির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বেরোবে বুধবার। তার আগে সোমবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের করা এক সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হতেই দেশ জুড়ে বাড়ল উদ্বেগ। অর্থনীতিবিদদের নিয়ে করা ওই সমীক্ষায় পূর্বাভাস, টানা চার মাস কমার পরে গত মাসে ফের মাথা তুলতে পারে পণ্যের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার। এর কারণ হতে পারে খাদ্যপণ্যের চড়ে যাওয়া দাম। সাধারণ মানুষ থেকে সরকার, এখন সকলের সব থেকে বড় মাথাব্যথা যেটি।
খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই ৫ শতাংশের নীচে নেমেছে। কিন্তু এখনও আনাজ-সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে ৮ শতাংশের বেশি হারে। বাজার করতে গিয়ে হাত পুড়ছে আমজনতার। সম্প্রতি মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের সমীক্ষা দেখিয়েছে, টোম্যাটো, পেঁয়াজ এবং আলুর দাম বাড়ায় গৃহস্থের নিরামিষ রান্নার খরচ বেশ কিছুটা বেড়েছে মে মাসে। হিসাব করতে বসে বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থা বহু দিন ধরেই দাবি করছে, অত্যাবশ্যক পণ্য কেনার খরচ বেশি বলেই অনেকের হাতে বাড়তি টাকা থাকছে না। যা চাহিদা বৃদ্ধির পথ আটকাচ্ছে। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় একাংশ বিপাকে পড়ছেন। এই অবস্থায় মে মাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রয়টার্সের সমীক্ষা কাঁপুনি বাড়াচ্ছে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
গত ৫-১০ জুন ৫০ জন অর্থনীতিবিদ সমীক্ষাটিতে অংশ নিয়েছেন। সেখানেই উঠে এসেছে মে মাসে সামান্য হলেও খুচরো মূল্যবৃদ্ধির মাথা তোলার আশঙ্কা। এপ্রিলে ছিল ৪.৮৩%। পূর্বাভাস, বেড়ে হতে পারে ৪.৮৯%। একাংশ তা ৫.২০% ছুঁতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে কারও কারও আশা, মূল্যবৃদ্ধির হার নামতে পারে ৪.৩০ শতাংশে। সব মিলিয়ে সমীক্ষা অনুযায়ী মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪.৩০-৫.২০ শতাংশ।
খুচরো বাজারে মূল্যসূচক হিসাবের অর্ধেক জুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম। ফলে মূল্যবৃদ্ধি চড়বে অনুমান করা অর্থনীতিবিদেরা একবাক্যে বলছেন, খাদ্যপণ্য দামি হবে বলেই এমনটা ঘটবে। ব্যাঙ্ক অব বরোদার অর্থনীতিবিদ অদিতি গুপ্ত বলেন, “আমাদের ধারণা, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে পচনশীল ফল এবং আনাজের দাম অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। সেই জন্যই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার আরও চড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। সেই সঙ্গে ডালের দামও ঊর্ধ্বমুখী।’’
গত বছর থেকেই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সার্বিক খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হারের বেশি। গত বারের অনিয়মিত বর্ষার পরে এ বার পরিস্থিতি ঘোরালো করেছে চড়া গরম। আনাজ এবং ফলের জোগানে টান ধরায় বেড়েছে দাম। মূলত খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলেই এ বারও সুদ অপরিবর্তিত রেখেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়ালেও আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের স্পষ্ট বার্তা, মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে স্থায়ী ভাবে বাঁধা না গেলে সুদের হার বদলানো হবে না। আর খাদ্যপণ্যের দামে লাগাম পরানো না গেলে সেটা যে সম্ভব নয়, এ ব্যাপারে কারও সংশয় নেই। যে কারণে পণ্য পরিবহণ খাতে খরচ কমাতে ডিজ়েলের দাম আরও কমানোর দাবিও উঠছে দেশ জুড়ে।