ব্যাঙ্ক সংযুক্তির কথা ঘোষণার দিনেই মাথাব্যথা বাড়াল বৃদ্ধির হার, কাঠগড়ায় সেই চাহিদা

এ দিন সরকারি পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট, মূলত বাজারে কেনাকাটা কমাই এর কারণ। এই খরচ বেড়েছে মাত্র ৩.১%।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২৬
Share:

অনেকের দাবি, এটা আসলে আর্থিক জরুরি অবস্থা নিয়ে সতর্ক বার্তা।

শিল্প মহলের একাংশ বলছে, সাবান থেকে শ্যাম্পু, বিস্কুটের মতো রোজকার ব্যবহারের জিনিসের বিক্রি যে ভাবে কমছে, তাতে এমন আশঙ্কা ছিলই। এর থেকে স্পষ্ট অর্থনীতির অবস্থা কতটা খারাপ। অনেকের দাবি, এটা আসলে আর্থিক জরুরি অবস্থা নিয়ে সতর্ক বার্তা। আর অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, বাজারে চাহিদার ঘাটতি যে কত গভীর হয়েছে তা আরও প্রকট হল। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ৫ শতাংশে নামার হিসেব প্রকাশের পরে এ ভাবেই সামনে এল বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ।

Advertisement

এ দিন সরকারি পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট, মূলত বাজারে কেনাকাটা কমাই এর কারণ। এই খরচ বেড়েছে মাত্র ৩.১%। গত ৫৪ মাসে এত খারাপ অবস্থা আসেনি। লগ্নি যে আসছে না তার প্রমাণ নতুন মূলধনে ৪% খরচ বৃদ্ধি। কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে ১ শতাংশের কম। কৃষিতে তা ২%।

সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট বিক্রম কির্লোস্কর বলেন, ‘‘এমন পরিসংখ্যান অপ্রত্যাশিত ছিল না। তবে শিল্পের গতি শ্লথ হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ল।’’ বায়োকন কর্ণধার কিরণ মজুমদার শ’ অবশ্য বলেছেন, বৃদ্ধি এতটা কমবে আশা করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘এটা যদি আর্থিক জরুরি অবস্থা সম্পর্কে সতর্ক বার্তা না হয়, তা হলে আর কি!’’

Advertisement

বৃদ্ধি ধাক্কা খাওয়ার কারণ হিসেবে বাজারে চাহিদার অভাবের কথাই বলেছেন সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, অর্থনীতিবিদ অনুপ সিন্‌হা, ভারত চেম্বারের প্রেসিডেন্ট সীতারাম শর্মা প্রমুখ। তাঁদের বক্তব্য, মানুষ দৈনন্দিন খরচেও রাশ টানছেন। যার কারণ কাজ কমা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা, যুক্তি অনুপবাবুর। সব মিলিয়ে চাহিদা তলানিতে। তাই লগ্নিতেও খরা।

আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায় অবশ্য দেশে চাহিদার অভাবের পাশাপাশি এ জন্য দায়ী করছেন মার্কিন-চিন শুল্ক-যুদ্ধকেও। তবে তাঁর দাবি, ‘‘অর্থনীতির এই হাল স্বাভাবিক ওঠাপড়ার নিয়মে নাকি কাঠামোগত ত্রুটির কারণে, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।’’ শর্মার প্রশ্ন, এ ভাবে পাঁচ বছরে ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করতে পারবে কেন্দ্র? কারণ, সে জন্য অর্থবর্ষে ৮ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি চাই। তাঁর মতে, ‘‘এটা কেন্দ্রের জন্য সতর্কবার্তা।’’

মোদী সরকারের জিডিপির হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনই বলেছিলেন, আসলে গড় বৃদ্ধি সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে প্রায় ২.৫ শতাংশ বিন্দু কম। অনুপবাবুও এ দিন বৃদ্ধি আরও কম কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। সুব্রহ্মণ্যনের কথা তুলে দীপঙ্করবাবু বলেন, এই হিসেবের ভিত্তিতে সেই বক্তব্য খতিয়ে দেখা উচিত। তবে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রীর সাম্প্রতিক পদক্ষেপ আশা জোগাচ্ছে তাঁদের। ঘুরে দাঁড়াতে সেই দাওয়াইয়ের সুফলের অপেক্ষাতেই রয়েছে শিল্প।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement