—প্রতীকী চিত্র।
দেশে কয়লা উৎপাদনের কাজে ব্যাঙ্ক থেকে ধার পাওয়ার পথ সহজ করতে পদক্ষেপ করল মোদী সরকার। উত্তোলনকারী সংস্থাগুলিকে পরিকাঠামো শিল্পের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবে সায় দিল কয়লা মন্ত্রক। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পরিকাঠামোর কাজে ঋণ পাওয়ার ঝক্কি কম। কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধাও মেলে। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, ব্যাঙ্ক থেকে পুঁজি পাওয়ার পথ চওড়া হলে ভারতে কয়লা উত্তোলনে জোর দিতে পারবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। ফলে আমদানি খরচ কমবে, বাড়বে জোগান। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ বাড়ানো যাবে। কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থাগুলিকে পরিকাঠামো শিল্পের আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব এখন অর্থ মন্ত্রকের সায়ের অপেক্ষায়। এ দিকে, জোগান বাড়াতে চলতি মাসে নতুন আরও ৪০টি কয়লা খনি নিলাম করবে সরকার। একই লক্ষ্যে লগ্নির পরিকল্পনা ছকেছে রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়াও (সিআইএল)। তোলার পরে খনি মুখ থেকে কয়লা যাতে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা-সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানা যায়, সে জন্য পরিকাঠামো সমেত গোটা ব্যবস্থার উন্নয়নে ৪৪,০০০ কোটি টাকা ঢালবে তারা।
বিদ্যুতের চাহিদা সামলাতে সম্প্রতি আগামী জুন পর্যন্ত আমদানি করা কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে পুরোদমে চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক। দেশীয় জোগান পর্যাপ্ত না হওয়ার কথা বলে অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে, কয়লার জোগানে ঘাটতি ৬% পেরোলেই সেগুলির সঙ্গে মার্চ পর্যন্ত আমদানি করা কয়লা মেশানোর ভাগ বাড়াতে হবে। ইতিমধ্যেই বাড়তি খরচ নিয়ে আপত্তি তুলে নির্দেশের বিরোধিতা করেছে বিদ্যুৎ মহলের একাংশ। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই প্রেক্ষিতে দেশে তার জোগান বাড়াতে উত্তোলন সংস্থাগুলিকে পরিকাঠামো শিল্পের মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সোমবার কলকাতায় খনিজ ও খনন সংক্রান্ত সম্মেলন ‘এশিয়ান মাইনিং কংগ্রেসে’ এসে কয়লা সচিব অমৃতলাল মিনা বলেন, “দেশে উত্তোলন বাড়াতে চায় কেন্দ্র। এই ক্ষেত্রে
ধার দিতে উৎসাহ দিতে চায় ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলিকে। পরিকাঠামো সংস্থা হলে উত্তোলন-কারীদের ঋণ দেওয়ার জন্য নীতি তৈরি করতে পারবে তারা।’’ তাঁর এটাও দাবি, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। ফলে তার বাড়তি উৎপাদনের জন্য কয়লার জোগানও বাড়াতে হবে। কিন্তু কেন্দ্র চায় যতটা সম্ভব আমদানি কমাতে। তাই দেশে উত্তোলন বৃদ্ধির একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জোগান বাড়াতেই খনিমুখ থেকে কয়লা পরিবহণ উন্নত করতে কোমর
বেঁধেছে সিআইএল। এ দিন অনুষ্ঠানের শেষে চেয়ারম্যান পি এম প্রসাদ জানান, রেল ওয়াগনে কয়লা তোলার ব্যবস্থা উন্নত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ জন্য ২৪,৭০০ কোটি টাকা ঢালবেন তাঁরা। খনি থেকে কয়লা তুলে যেখানে রাখা হয়, সেই সব কেন্দ্রের সঙ্গে রেল যোগাযোগের পরিকাঠামো তৈরি করতেও লগ্নি করা হবে আরও ২০,০০০ কোটি।